‘ও যদি আঙুলটা নাড়াতো তাতেও মনকে সান্ত্বনা দিতাম’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ জুন,শনিবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:৪১ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ফাইল ছবি
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হসপিটালে ডেলিভারির সময় ভুল চিকিৎসার কারণে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মাহবুবা আক্তার আঁখি। গত তিনদিন ধরে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতলের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। কিন্তু ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।
এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।
এ অব্স্থায় স্বামী ইয়াকুব আলী সেন্ট্রাল হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে পরে তার স্ত্রীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করান।
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেলে সাড়ে ৩টায় আঁখির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে চাওয়া হয় তার স্বামী ইয়াকুবের কাছে।
তিনি জানান, প্রেসার আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে কিডনির ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। আজকেও ডায়ালাইসিসি করা হতে পারে। তবে এখনও জ্ঞান ফিরেনি।
ইয়াকুব বলেন, এখনও ওর সাথে একবারের জন্যও কথা বলতে পারিনি। ও যদি ওর আঙুলটাও নাড়াতো তাহলে মনকে একটু সান্ত্বনা দিতাম।
এসময় স্বামী ইয়াকুব আলী তার স্ত্রীর (মাহবুবা আক্তার আঁখি) জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
স্বামী ইয়াকুব আলী জানান, গত তিন মাস ধরে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে আমার স্ত্রী নিয়মিত চেকআপ করাচ্ছিলেন। তার অধীনেই ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডেলিভারির দিন ডা. সংযুক্তা দেশেই ছিলেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করে এবং ডেলিভারি করে।
এর আগে নবজাতকের মৃত্যু এবং মা মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ার ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তারা হলেন- ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্না।
এ ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে বুধবার (১৪ জুন) রাতে ধানমন্ডি থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন ইয়াকুব আলী সুমন।