‘চোখের সামনেই তলিয়ে যায় তানভীর, আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ জুন,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:৩৮ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঢাবি শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদ
দু’দিন অতিবাহিত হলেও কুষ্টিয়ার গড়াই নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর আহম্মেদের সন্ধান মেলেনি। তার সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উদ্ধারকর্মীরা বলছেন সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত তাদের উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
সোমবার দুপুরে তানভীর ঢাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে ১৩ সহপাঠীসহ কুষ্টিয়ায় আসেন বেড়াতে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে বিকেলে গড়াই নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হন তানভীর। তার বাড়ি বরগুনা জেলায়।
এদিকে সোমবার রাতেই তানভীর আহমেদ নিখোঁজের সংবাদ শুনে তার নিজ জেলা বরগুনা থেকে কুষ্টিয়ায় আসেন তানভীরের বাবাসহ তার আত্মীয় স্বজনেরা। বাবা আব্দুল মালেক সকালে ছুটে যান গড়াই নদীতে। যেখানে তানভীর নিখোঁজ হন। সাথে ছিলেন তানভীরের বোন ও মামা।
তানভীরের বাবা আব্দুল মালেক জানান, তানভীরের সাথে সোমবার দুপুর ১টার দিকে সর্বশেষ কথা হয়। তখন মেহেরপুর থেকে কুষ্টিয়া আসছিল তারা। কখন ঢাকায় ফিরবে জানতে চাইলে তানভীর রাতে
জানাবে বলেও বাবাকে ফোনে জানায়। কিন্তু তার আগেই তানভীরকে হারাতে হয়েছে।
অশ্রুসিক্ত কন্ঠে তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার তানভীর তাকে জানিয়েছিল তারা বন্ধুরা মিলে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় যাবে। মাঝে আমাদের বাড়িতে উঠবে। কিন্তু পরে তানভীর জানায়
কুয়াকাটায় আর যাওয়া হচ্ছেনা। তারা মেহেরপুরের মুজিবনগর এবং কুষ্টিয়ায় যাবে।
বোন তামিমা জানান, ভাইটা আমাদের অত্যান্ত আদরের। কিন্তু আজ আমার ভাইকে পাওয়া যাচ্ছেনা। আদৌ পাওয়া যাবে কি না জানিনা। তিনি জানান নদীতে গোসল করতে গিয়ে ভাই নিখোঁজ হয়েছে তা আমার মাকে জানায়নি। শুধু জানিয়েছি তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আমার মাকে কী জবাব দিব।
সহপাঠী রায়হানুল করিম রাব্বী ছিলেন নিখোঁজের সময়। চোখের সামনেই গভীর পানিতে তলিয়ে যায় বন্ধু তানভীর। আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি। ৯ বন্ধু মিলে যখন পানিতে নামি তখন রেলব্রীজের
ওপর দিয়ে ট্রেন যাচ্ছিল। আমাদের খেয়াল সে দিকে ছিল। পরক্ষণে দেখি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে তানভীর।
কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার বখতিয়ার উদ্দিন জানান কুষ্টিয়া সদর ও কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস কর্মী ছাড়াও খুলনা থেকে ৬ সদস্যের ডুবুরি দল এসেছে উদ্ধার অভিযানে। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বরগুনা জেলার বাসিন্দা তানভীর ও তার ১২ বন্ধু মিলে বেড়াতে এসেছিলেন কুষ্টিয়ায়। তানভীরের বাবা আব্দুল মালেখ
বরগুনা সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক।