ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় সমাজসেবা কর্মকর্তার দুই নারীকে থাপ্পড়!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৪ মে,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:৩৭ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় দুই নারীকে থাপ্পড় ও ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ করেন এক নারী। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকার গৃহিণী নাজমা বেগম ও জান্নাত বেগম। নাজমা বেগম তার ছেলেকে বিদেশ পাঠাবেন ও জান্নাত বেগম স্বামীর মাছ ধরার জাল কিনবেন বলে চার মাস আগে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে আরএসএস প্রকল্পে ৫০ হাজার, ৫০ হাজার মোট ১ লাখ টাকা ঋণের প্রস্তাব করেন। ওই দুই নারীর অভিযোগ- ঋণ পেতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তারা ১০ হাজার টাকা ঘুষ দেন। চার মাস পার হলেও ওই কর্মকর্তা ঋণ দিতে গড়িমসি করতে থাকে। ঋণের ব্যাপারে গতকাল সোমবার (২২ মে) বিকেল ৪টার দিকে নাজমা ও জান্নাত সমাজসেবা কার্যালয় কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কক্ষে যায়। তখন ওই নারীরা বলেন, আমাদের ঋণ দেবেন কবে, তখন ঋণ দিতে অস্বীকার করেন ওই কর্মকর্তা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে নাজমার গালে থাপ্পড় মারেন মিজানুর রহমান। প্রতিবাদ করলে জান্নাতকে ধাক্কা মারেন তিনি। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে দুই নারীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন নাজমা।
মঙ্গলবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেনকে সভাপতি করে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কহিনুর সুলতানা ও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর সাহিনুর বেগমকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন ইউএনও। সাত দিনের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ঘুষ দিয়ে চার মাস ঘুরেছি ঋণ পাইনি। তাই সোমবার বিকেলে সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিসারের কক্ষে যাই এবং বলি আমাদের ঋণ দেবেন কবে। ঋণ না দিলে আমাদের টাকা ফেরত দেন। টাকা ফেরত চাওয়ায় এ নিয়ে তার সঙ্গে আমাদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে আমাদের থাপ্পড় ও ধাক্কা মারেন মিজানুর রহমান। আমাদের টাকা ফেরত চাই। আর থাপ্পড় ও ধাক্কার বিচার চাই।
অভিযুক্ত ভেদরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই নারী দুজন যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই নারীরা আমার কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণ হলে সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের জন্য সমাজসেবা ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ পাঠিয়ে দেব।