প্রেমের বিয়ের ১৮ দিনেই যৌতুকের দাবিতে নববধূকে মারধর, থানায় মামলা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ এপ্রিল,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০২:২৭ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রেমের বিয়ের ১৮ দিন যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে নববধূকে মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
নববধূ মনি আক্তার নির্যাতনের অভিযোগ এনে তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেছেন। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার মজিবুর সরদারের মেয়ে মনি আক্তারকে (২৩) একই থানার আফাজনগর এলাকার সেলিম আহমেদের ছেলে আসিফ আহমেদ (৩২) গত ২৬ মার্চ ১৫ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর আসিফ নববধূ মনিকে নিজের বাড়িতে না নিয়ে তার বাবার বাড়িতে রাখেন এবং পরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাবেন বলে আশ্বাস দেন। এর মধ্যে আসিফ প্রায় সময় মনির বাসায় আসা যাওয়া ও অবস্থান করতেন। বিয়ের বিষয়টি আসিফ তার বাবা মাকে জানালে তারা মনিকে মেনে নেয়ার শর্ত বাবদ তার বাবার বাড়ি থেকে কাপড়ের ব্যবসার জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সেই দাবি অনুযায়ী গত ৮ এপ্রিল দুপুরে মনির পরিবারের কাছ থেকে নগদ আট লাখ টাকা নিয়েও যায় আসিফ। দাবিকৃত বাকি দুই লাখ টাকা দ্রুত দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে যায়।
এ ঘটনার পাঁচদিন পর বাকি টাকা না পেয়ে ১৪ এপ্রিল সকালে আসিফ তার বোন আফরিন, বাবা সেলিম আহমেদ ও মা নার্গিস বেগম মিলে বাসায় গিয়ে মনি আক্তারকে মারধর করে আসেন। তবে ওই সময় মনির পরিবারের লোকজন সবাই বাইরে ছিলেন। পরে বাসায় এসে বিষয়টি জানতে পেরে আহত মনিকে শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেন।
এ ঘটনার একদিন পর আহত মনি আক্তার কিছুটা সুস্থ হলে রোববার (১৬ এপ্রিল) সকালে ফতুল্লা থানায় গিয়ে একটি মামলা করেন।
মনি আক্তার দাবি করেন, তিনি নিজ বাসায় বিউটি পার্লার দিয়ে বিউটিশিয়ানের কাজ করেন। আর আসিফ কাপড়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা করেন। বাসার সামনে প্রথম দেখায় আসিফ তার পিছু নেন। এরপর যখন তখন বাসার সামনে দাঁড়িয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে দেখা ও নানা জায়গায় ঘোরাফেরা করে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সময় আসিফ হাঁটু গেড়ে বসে মনিকে প্রেম নিবেদনসহ নানা ভঙ্গিতে ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এতে এলাকায় মনিকে নিয়ে নানা সমালোচনা সৃষ্টি হয়। নিজের ও পরিবারের সম্মান রক্ষা করতে মনি কথাবার্তা কমিয়ে দিলে আসিফ আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়। পরে আসিফের পাগলামিতে বিয়ের জন্য রাজি হন মনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।