৫ কেজি চালের জন্য ৪ ঘণ্টা অপেক্ষা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:৪৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
সকাল ৭টা। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। রাস্তাগুলো অনেকটা সরব। মানুষ কাজের জন্য ছুটছেন এদিক-ওদিক। এই সময়ে ২০-২৫ জন নারীকে দেখা গেল রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে বসে আছেন। কারও পরনে পুরোনো শাড়ি। কেউ আছেন বোরকা পরে। কেউ ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে আছেন। তাঁরা সবাই নিম্ন আয়ের পরিবারের মানুষ।
এই চিত্র শৈলকুপা উপজেলার কবিরপুর মোড় এলাকার। ওএমএসের ডিলার ট্রাকে করে চালসহ কয়েকটি পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করেন এই এলাকায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষের ভিড়ও বাড়তে থাকে।
তাঁদের মধ্যে মোমেনা খাতুনের বয়স ৬০ এবং রহিমা খাতুনের ৬২ বছর। তাঁদের বাড়ি উপজেলার ঝাউদিয়া এলাকায়। ভোর ৫টায় এসেছেন এই দুই বৃদ্ধা। তাঁদের অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। কখন বাজবে ৯টা।
মোমেনা ও রহিমা বলেন, ভোর ৫টায় আসার পরও জায়গা পাওয়া যায় না। সরবরাহ কম, আগে না এলে চাল পাওয়া যাবে না। বাইরে থেকে চাল কিনে খাওয়ার সক্ষমতা তাঁদের নেই। তাই পাঁচ কেজি চালের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে বসে আছেন তাঁরা।
শৈলকুপা পৌর এলাকায় চারটি ওএমএস দোকানে সপ্তাহে পাঁচ দিন চাল বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি দোকানে এক টন বিতরণ করা হয়। পাঁচ কেজি হারে প্রতি দোকানে ২০০ জনকে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিতরণ করে থাকেন ওএমএস ডিলার।
পৌর এলাকার কবিরপুর চরের বাসিন্দা রুবিয়া খাতুন বলেন, ২০০ জনের জন্য পাঁচ কেজি হারে চাল বরাদ্দ। কিন্তু মানুষ আসে ৩০০ থেকে ৪০০ জন। দেরিতে এলে টিকিট পাওয়া যায় না, তাই ফজরের আজানের পরপরই চলে আসতে হয়।
নতুন বাজারের ওএমএস দোকানের মালিক আব্দুস সোবহান বলেন, ভোর থেকে নিম্ন আয়ের নারী-পুরুষ চালের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চাল বিতরণের নিয়ম থাকলেও সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে সব শেষ হয়ে যায়। অনেকেই চাল না পেয়ে ফেরত যান।
উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কার্তিক চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পৌর এলাকায় চারটি ওএমএস দোকানে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ করা হয়। প্রত্যেকে পাঁচ কেজি চাল পেয়ে থাকেন। প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন এক টন চাল ২০০ মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। আপাতত চালের সরবরাহ বাড়ানোর নির্দেশনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।