উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ জুলাই,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৩১ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
আজ বুধবার আবারও রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। মাত্র দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে উভয় দলই রাজধানীর দুটি স্থানে বড় সমাবেশের নামে সাংগঠনিক শক্তির মহড়া দেখানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। বিএনপি আজকের সমাবেশ থেকে সরকার হটানোর এক দফা কর্মসূচি ঘোষণার কথা বলছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ আজ ঢাকায় ডেকেছে শান্তি সমাবেশ। এতে লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে রাজপথ এখনো আওয়ামী লীগের দখলেই রয়েছে তার প্রমাণ দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে। দুপক্ষের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। দুপক্ষই যার যার অবস্থানে অনড় থাকায় রাজপথেই গড়াচ্ছে রাজনীতি। আজ বুধবার রাজধানীতে বড় শোডাউন করবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা দুইটায় অনুষ্ঠেয় সমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। অন্যদিকে একই সময় দেড় কিলোমিটার অদূরে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে দুদলই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বললেও রাজধানীতে দুই বড় দলের রাজনৈতিক শোডাউনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। জনমনে কিছুটা হলেও উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠারও সৃষ্টি করেছে।
তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পৃথক বড় দুই শোডাউনকে ঘিরে যাতে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশের সৃষ্টি না হয় সেজন্য আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলবে বলে জানা গেছে। নয়াপল্টন ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের মাঝামাঝি জায়গায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা প্রাচীর গড়ে তুলবে। সমাবেশের এই দুটি স্থান ছাড়াও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও গড়ে তোলা হবে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ধৈর্য ধরে সবকিছু মোকাবিলার কথা বলা হলেও ডিএমপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ থেকে কোনো অরাজকতা, উস্কানি কিংবা নাশকতার চেষ্টা করা হলে সেক্ষেত্রে চুপ করে বসে থাকবে না পুলিশ। ডিএমপির পক্ষ থেকে ২৫ দফা শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজপথে তাদের শক্তি দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে যেমন চাপে ফেলতে চাইছে, তেমনি দুই দলই নিজেদের অবস্থানের পক্ষে বিদেশীদের ওপরও এক ধরনের চাপ তৈরি করতে চাইছে। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যখন বৈঠক করতে হবে, তখন রাজপথে শক্তি দেখানোর বিষয়টি আলোচনায় দর-কষাকষির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরনের চিন্তা থেকেই দুই দলই বিদেশীদের এসব সফরকে গুরুত্ব দিয়ে এখন রাজপথে শক্তিমত্তা প্রদর্শনের কৌশল নিয়েছে। আর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস বাকি থাকতে স্বল্প দূরত্বে এবং এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি সমাবেশ শান্তিপূর্ণ রাখা একটা চ্যালেঞ্জ।
বিএনপি ॥ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজকের সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দলগুলোও আলাদা আলাদা সমাবেশ করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে বিকেল ৪টায় সমাবেশ করবে। ১২ দলীয় জোট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয়নগর পানি ট্যাংকের কাছে, এলডিপি তেজগাঁওয়ে এফডিসির কাছে দলের কার্যালয়ের সামনে, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি মতিঝিল ইডেন গার্ডেনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে, লেবার পার্টি নয়া পল্টনের মসজিদ গলিতে দলের কার্যালয়ের সামনে থেকে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
আর গণঅধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া) ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাতীয় প্রেসক্লাবে এবং গণঅধিকার পরিষদ (নূরুল হক নূর), গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় সমাবেশ করে কর্মসূচি ঘোষণা করবে। এদিকে আজকের সমাবেশ সফল করতে বিএনপি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে সমাবেশে উপস্থিত হতে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিএনপি ও তাদের সমমনা বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা এখন সরকারের পদত্যাগ তথা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগকে ‘এক দফা’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পালন করতে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তাই আজ কর্মসূচি পালনের পর যুগপৎভাবে তা পালন করবে সমমনা সব দল।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো, জোটগুলো আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বুধবার আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের নতুন গণতন্ত্রের জন্য যে যাত্রা, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে নতুন যে আন্দোলনের যাত্রা তার ঘোষণা আমরা দেব। আমরা বারবার করে বলছি, আবারও বলছি, দেশটাকে বাঁচানোর জন্য এখনো সময় আছে। সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। জনগণের যে দাবি, একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করে একটা নির্বাচন দিক। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংকট দূর হবে বলে আমরা মনে করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে।
এদিকে মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আগামীকাল (আজ বুধবার আমরা আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা দেবো এবং সেই যৌথ ঘোষণা দেয়ার জন্য যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে যারা আছে সবাই যার যার অবস্থান থেকে সেই ঘোষণা দেবে। আমরা মনে করি, এরকম একটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে জাতি আশান্বিত হবে, উজ্জীবিত হবে। আন্দোলন আরও শক্তিশালী-বেগবান হয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে গত তিনদিনে বিএনপি গণতন্ত্র মঞ্চ, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা দল, এলডিপি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করে একটি সমন্বিত কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে। মঙ্গলবারও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি গণঅধিকার পরিষদ (নুরুল হক নূর), গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও সাধারণ ছাত্র অধিবার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, কাকরাইল বিজয়নগর থেকে শুরু করে নয়া পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দীর্ঘ সড়ক হয়ে আরামবাগ পুলিশ বক্স পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীসহ আগত মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে মহানগর বিএনপি। এ জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতাকর্মীরা ক’দিন ধরে অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিয়ে সিরিজ বৈঠক করেছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান জানান, আমাদের সমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সমাবেশ সফল করার জন্য আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছি। তাই আমরা আশা করছি, সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। ঢাকার জনগণ রাজপথে তাদের দাবি নিয়ে আসবে এবং এই সমাবেশে থেকে যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হবে তা বাস্তবায়ন হলে জনগণ তার ভোটাধিকার ফিরে পাবে এবং জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। তবে এই সমাবেশ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় সেজন্য আমরা অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছি। ঢাকা মেট্রোপলিট পুলিশের কাছে আমরা সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছি।
উল্লেখ্য, গত বছর ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠের জনসভা থেকে বিএনপি সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা ঘোষণা করে। এর পর থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে। টানা ৭ মাস ধরে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, পদযাত্রা, বিভাগীয় শহরে সমাবেশ প্রভৃতি কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপিসহ শরিক জোটগুলো। আর আজ বিএনপি সমাবেশ থেকে ঘোষণা করবে নতুন কর্মসূচি। সমমনা দলগুলোও অনুরূপ কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
আওয়ামী লীগ ॥ শান্তি সমাবেশে লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে আজ বুধবার রাজধানীতে সাংগঠনিক শক্তির বড় মহড়া দেখাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। মানুষের ঢল নামিয়ে বিএনপির সমাবেশের জবাব দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ করেছে দলটি। বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের আয়োজন করা হলেও আওয়ামী লীগের টার্গেট পল্টনের মুক্তাঙ্গন থেকে গুলিস্তান, জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে নবাবপুর রোডসহ চতুর্দিকে তীব্র জন¯্রােত জানিয়ে শান্তির সমাবেশকে রীতিমতো জনসমুদ্রে করে বিএনপিকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে। একই সঙ্গে আজ ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে দলের নেতাকর্মী, সমর্থকদের।
কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করেছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতৃবৃন্দ। তারা বিশেষ বর্ধিত সভা করে ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণের সকল সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকা থেকে সর্বাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এনে সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকেও ঢাকা মহানগরীর সকল প্রান্ত থেকে তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দেবেন ঢাকা জেলার সাত থানা ও তার অন্তর্গত ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরাও। সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন- অতীতের সমাবেশ থেকে আজকের সমাবেশ আরও ব্যাপকভাবে করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মসূচি ঘিরে যেন কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ মঙ্গলবার পৃথক বর্ধিত সভা করে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
সরেজমিনে সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, শান্তি সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। লাখো মানুষের সমাবেশ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, নবাবপুর, ঠাটারীবাজার, হাইকোর্ট, পল্টন, বিজয়নগর ও দৈনিক বাংলার মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে এসব দীর্ঘপথে অসংখ্য মাইক লাগানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও যোগ দেবে এ সমাবেশে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির সমাবেশের থেকে তাদের সমাবেশের দূরত্ব দুই কিলোমিটারের মতো হলেও তারা কোনো উস্কানিতে ফাঁদে পা দেবে না। আগ বাড়িয়ে কোথাও বিএনপিকে বাধা প্রদান কিংবা সংঘাতে না জড়াতে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিএনপি সমাবেশের নামে অতীতের মতো অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতা কিংবা অরাজকতার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হলে আওয়ামী লীগ চুপ করে বসে থাকবে না। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব যেহেতু সরকারের, তাই সরকারি দল হিসেবে তারা জনগণের পাশে থেকে বিএনপিসহ তাদের মিত্রদের নাশকতার চেষ্টা রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে।
দলটির নীতিনির্ধারক নেতারাও এও বলছেন, বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা দেওয়া হবে না, কিন্তু তাদের ফাঁকা মাঠে গোলও দিতে দেওয়া হবে না। রাজধানীতে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে লাখো মানুষের ঢল নামিয়ে তারা বিএনপিসহ তাদের সমমনাদের বুঝিয়ে দিতে চায় গত সাড়ে ১৪ বছরের মতো এখনো দেশের রাজপথ তাদেরই দখলে রয়েছে। এর মাধ্যমে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা ও চাপে রাখার পাশাপাশি বিদেশীদের দেখিয়ে দেয়া গত সাড়ে ১৪ বছরের দেশের অভূতপূর্ব ও বিস্ময়কর উন্নয়নের ফলে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের পাশেই রয়েছে। দেশের জনগণ আর বিএনপি-জামায়াতের অতীত দুঃশাসন ও অন্ধকার যুগে আর ফিরে যেতে চায় না তাও দেখিয়ে দেবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিএনপির মাঝেমধ্যে এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করে। তাই তাদের আবারও নতুন এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা, এটা যে বিশেষ গুরুত্ববহ তা নয়। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারই তাদের মূল উদ্দেশ্য। সেই সুযোগ আমরা দেব না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকব, জনগণের পাশে থাকব। দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেব না।