দৃষ্টিশক্তি হারানোর আগেই সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বাবা-মা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:১৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কানাডার অধিবাসী এডিথ লেমে এবং সেবাস্টিয়ান পেলেটার দম্পতির চার সন্তান। এদের মধ্যে তিনজনই ইতোমধ্যে চোখের বিরল এক রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসক জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাবে তারা। সন্তানদের দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার আগে তাই তাদের পৃথিবী ঘুরে দেখাতে বিশ্বভ্রমণে বেরোলেন বাবা-মা।
ওই দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে বড় মিয়া। মেয়েটির বয়স যখন তিন বছর তখন ওই দম্পতি প্রথম লক্ষ্য করেন মিয়ার দৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে। এরপর তারা মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক জানান, মিয়া 'রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’ নামক চোখের জটিল এক রোগে ভুগছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকে এই রোগে।
'রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’ সাধারণত বংশগত একটি রোগ। পরিবারে কারও থাকলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
এডিথ লেমে এবং সেবাস্টিয়ান পেলেটার দম্পতির আরও তিন ছেলে রয়েছে। ২০১৯ সালে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায়,ওই দম্পতির সাত বছর বয়সী ছেলে কলিন ও পাঁচ বছর বয়সী লরেন্টও একই রোগে আক্রান্ত। তবে ৯ বছর বয়সী লিও এখনও শঙ্কামুক্ত বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক।
নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে এডিথ লেমে বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ 'রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’রোগ প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কোন নিরাময় বা কার্যকর চিকিৎসা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি না কত দ্রুত তারা দৃষ্টি হারাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে,হয়তো মধ্যবয়সে তারা পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারাবে।
বড় মেয়ে মিয়ার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন,ভালো কিছু দৃশ্য তার স্মৃতিতে রাখতে পারেন। এটা শোনার পর ওই দম্পতি অন্য সন্তানদের জন্যও একই কথা ভাবেন। শুধু দৃশ্য নয়, ওই দম্পতি চাইছেন সন্তানদের স্মৃতিতে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও লোকএনর ছবিও রাখতে। এ কারণে ওই দম্পতি সময় থাকতেই সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।
দু’বছর আগে থেকেই বিশ্বভ্রমণের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু অতিমারির কারণে অন্য দেশে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতেই চলতি বছরের মার্চ মাসে সফর শুরু করেন তারা। এরই মধ্যে তারা সন্তানদের নিয়ে জাম্বিয়া, তানজানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, আফ্রিকা ঘুরে ফেলেছেন। এক বছর তারা এভাবেই ঘোরার পরিকল্পনা করেছেন। ওই দম্পতির মতে, এই সফর থেকে সন্তানদের মনে একটা সুন্দর স্মৃতি তৈরি হবে। সেই সঙ্গে এই সফর তাদের মানসিক বিকাশেও সাহায্য করবে।