আস্ত নৌকাসহ যুবক সিমানকাসকে গিলে ফেললো তিমি, অতঃপর...
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৫ | আপডেট: ০৮:৪২ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২৫

এ যেন হলিউডের সিনেমার মতো। চিলির বাহিয়া এলো আগুইলায় সমুদ্রে বাবার সঙ্গে কায়াকিং করছিল মাত্র ২৪ বছরের যুবক অ্যাড্রিয়ান সিমানকাস। ছেলের থেকে একটু দূরে ছিল বাবা। কিন্তু ঠিক সেই সময় ঘটে সাংঘাতিক অঘটন। হঠাৎ করে হাজির হয় এক বিশালাকার হাম্পব্যাক তিমি। বাবার চোখের সামনেই কায়াক (রাবারের বোট) সমেত গিলে খেয়ে নেয় অ্যাড্রিয়ানকে। যদিও পরক্ষণে আবার বমি করে অ্যাড্রিয়ান সমেত কায়াক মুখ থেকে বের করে দেয় সেই তিমি। ঘটনাটি ঘটে চিলির দক্ষিণতম পাতাগোনিয়া অঞ্চলের ম্যাগেলান প্রণালীর সান ইসিড্রো লাইট হাউসের কাছে। সম্পূর্ণ ঘটনাটি কাকতালীয় ভাবেই রেকর্ড করেন অ্যাড্রিয়ানের বাবা ডেল। ছেলের থেকে একটু দূরেই কায়াকিং করছিলেন ডেল। বাবার করা সেই ভিডিওতে দেখা যায় ছেলে কায়াকিং করছেন। হঠাৎ একটা বড় ঢেউয়ের মতো আসে। ডেল তিমিটিকে ঢেউ ভেবে প্রথমে ভুল করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেটাই ছিল বিশাল হাম্পব্যাক তিমি। কায়াক সমেত অ্যাড্রিয়ানকে গিলে খেয়ে নেয় তিমিটি। কয়েক সেকেন্ড পরেই অ্যাড্রিয়ানকে ছেড়ে দেয়।
এরপরেই ছেলেকে শান্ত করার চেষ্টা করেন ডেল। ডেল সেই মুহূর্তের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানান, হঠাৎই তিনি পিছনে ঘুরে দেখেন একটা বড় নীল-সাদা বিশালাকার প্রাণী এসে তার ছেলেকে গিলে খেয়ে নিচ্ছে। অথচ তার কিছুই করার নেই, এমনকি তিনি এও জানেন না যে তার ছেলে বাঁচবে কি না। অবিশ্বাস্য এ ঘটনার অনুভূতি প্রকাশ করে ২৪ বছরের টগবগে অ্যাড্রিয়ান বলেন, আমি অনুভব করলাম যেন একটা বিশাল অন্ধকার গহ্বর আমাকে ঢেকে ফেলল। আমার নাকেমুখে ও শরীরে কেমন একটা পিচ্ছিল অনুভূতি হলো। মনে হলো, আমি বোধহয় আর বাঁচব না!
অ্যাড্রিয়ান জানান, বাবা ডেলকে নিয়েও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। হয়তো তারা আর ফিরতে পারবেন না। অথবা প্রবল ঠান্ডার কারণে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে। যদিও শেষ পর্যন্ত বাবা-ছেলে দুজনেই নিরাপদে তীরে ফিরে আসেন। এর পরেও এতটুকু উদ্যম কমেনি তাদের। আর কোনও দিন কায়াকিং করতে যাবে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে, পিতা-পুত্র জোরের সঙ্গে বলেন ‘অবশ্যই’।এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিজ্ঞানী ভেনেসা পিরোত্তা ব্যাখ্যা করেছেন, হাম্পব্যাক তিমিরা মানুষের মতো বড় কিছু খাওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। এটি আসলে লাং-ফিডিং করছিল। যার মানে হলো- তারা একবারে প্রচুর পরিমাণে পানির সঙ্গে মাছ ও ক্রিল গিলে ফেলে। কায়াকটি (রাবারের বোট জাতীয়) তার খাবারের সঙ্গে চলে আসায় সে ভুলবশত এটিকে গিলে ফেলে। কিন্তু বুঝতে পেরেই ছেড়ে দেয়।
তিমিদের ঘাড়ের গঠন ও সরু খাদ্যনালী মানুষের মতো বড় কিছু গেলার উপযোগী নয়। তাই এটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল! এটিই প্রথমবার নয়। ২০২১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় এক ডুবুরিকে একইভাবে গিলে ফেলে একটি তিমি। তবে কয়েক সেকেন্ড পরই তাকে বের করে দেয়।
সূত্র : বিবিসি