avertisements 2

প্রবাসকর্মীরা কাজ হারিয়ে ফিরছেন

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:১৬ এএম, ২৯ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:১৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২৪

Text

বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসকর্মী ফেরত অব্যাহত রয়েছে। শুধু অক্টোবরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৫৯ হাজার ৯২৪ জন প্রবাসী। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে আড়াই হাজারেরও বেশি কর্মী ফিরে আসছেন।

গত ১ এপ্রিল থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে সোয়া দুই লাখেরও বেশি প্রবাসী দেশে ফিরেছেন বলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ, করোনার কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, প্রতারিত হওয়া ও ভিসার মেয়াদ শেষ বা আকামা না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে তারা ফিরে এসেছেন। কেউ কেউ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরে যেতে পারবেন জানালেও সিংহভাগেরই ফিরে যাওয়া নিয়ে সন্দিহান মন্ত্রণালয়।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে গত ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসফেরত কর্মীর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১৪৬ জন এবং নারী ২৫ হাজার ৪৩৬ জন। তাদের মধ্যে বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে এক লাখ ৯১ হাজার ১৯৪ জন ও আউটপাস নিয়ে ৩৪ হাজার ৩৮৮ জন ফিরে এসেছেন।

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা কর্মীর সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার ৮৮৯ জন। প্রবাসফেরতদের ৫৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ কর্মীই এ দুটি দেশ থেকে এসেছেন। নির্দিষ্ট ২৮টিসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার ৯৬৯ জন সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছেন; যার মধ্যে পুরুষ ৫০ হাজার ৪৬৬ জন ও নারী ১০ হাজার ৫০৩ জন।

বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাসের মাধ্যমে, অনেকে কাজ হারিয়ে, আবার অনেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৫৯ হাজার ৯২০ জন ফেরত আসেন; যার মধ্যে ৫৫ হাজার ৮২ জন পুরুষ ও নারী চার হাজার ৮৩৮ জন। প্রতিদিন এ সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

কর্মীরা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের আবার ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলে কোম্পানি ফেরত পাঠিয়েছে।

মালদ্বীপ থেকে ১২ হাজার ১৫৯ জন ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৫৫ জন ও নারী ১০৪ জন। পর্যটননির্ভর দেশ হওয়ায় করোনার কারণে কাজ নেই তাই মালিকপক্ষ বা কোম্পানি তাদের ফেরত পাঠিয়েছে। কাজের বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সিঙ্গাপুর থেকে চার হাজার ৬৪ জন ফেরত এসেছেন।  

বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে ওমান থেকে ফেরত আসেন ১৩ হাজার ৪৮৬ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৫৭৯ জন ও নারী এক হাজার ৪২৬ জন। কুয়েত থেকে ১০ হাজার ৮৯৩ জন ফেরত আসেন; যার মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৬৪৯ জন এবং নারী ২৪৪ জন। আকামা বা ভিসার মেয়াদ না থাকায় কিংবা অবৈধ হওয়ায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। আবার অনেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন।

বাহরাইন থেকে ফেরত এসেছেন এক হাজার ৪১১ জন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩১৬ জন পুরুষ ও ৯৫ জন নারী। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে তারা দেশে এসেছেন। এছাড়া অসুস্থ কিংবা চাকরি হারিয়ে অনেকে ফিরে এসেছেন।

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১৩৬ জন এবং তাদের সবাই পুরুষ।

এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছেন ৭১ জন এবং তাদের সবাই পুরুষ। কাতার থেকে এসেছেন ২৩ হাজার ১১৮ জন; যার মধ্যে পুরুষ ২০ হাজার ৯০৩ জন ও নারী দুই হাজার ২১৫ জন।

মালয়েশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০ হাজার ৮২১ জন; তাদের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩৪২ জন ও নারী ৪৭৯ জন। থাইল্যান্ড থেকে ফেরত এসেছেন ৮৯ জন; যার মধ্যে পুরুষ ৭৮ জন ও নারী ১১ জন। মিয়ানমার থেকে ফেরত এসেছেন ৩৯ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজ নেই তাই দেশে ফিরে এসেছেন তারা।

জর্ডান থেকে এসেছেন দুই হাজার ২০৪ জন; যার মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন ও নারী এক হাজার ৭৯৬ জন। সবাই গার্মেন্ট শ্রমিক। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সবাই দেশে ফেরত আসেন। ভিয়েতনাম থেকে ফেরত এসেছেন ১২১ জন। তারা প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরে আসেন। কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন ফেরত আসেন। তাদের সকলেই পুরুষ। কাজ না থাকায় তারা দেশে ফিরে আসেন। ইতালি থেকে ফেরত আসেন ১৫১ জন। তাদের সকলেই পুরুষ।

৬ জুলাই বাংলাদেশে থেকে যাওয়া এ কর্মীদের করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। ইরাক থেকে এসেছেন আট হাজার ৮৯২ জন; তাদের মধ্যে পুরুষ আট হাজার ৮৩২ জন ও নারী ৬০ জন। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা।

শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত এসেছেন ৫৪৮ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা ফেরত আসেন। মৌরিশাস থেকে ফেরত এসেছেন ৪৫২ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১৪০ জন ও নারী ৩১২ জন। কাজের মেয়াদ না থাকায় ফেরত এসেছেন তারা। রাশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০০ জন। তাদের ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি।

তুরস্ক থেকে ফেরত আসেন আট হাজার ৫৫৮ জন; তাদের মধ্যে পুরুষ সাত হাজার ৯১১ জন ও নারী ৬৪৭ জন। কাজ না থাকায় তারা ফেরত এসেছেন। লেবানন থেকে ফেরত আসেন ছয় হাজার ৬৯৯ জন; তাদের মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৪২৬ জন ও নারী দুই হাজার ২৭৩ জন। অনেকের কাজ নেই তাই ফেরত আসেন এবং অনেকে আউটপাস নিয়ে ফেরত এসেছেন।

নেপাল থেকে ফেরত এসেছেন ৫৫ জন; যার মধ্যে পুরুষ ৪০ জন ও নারী ১৫ জন। তাদের ফেরত আসার কোনো কারণ জানা যায়নি। হংকং থেকে ফেরত এসেছেন ১৬ জন; পুরুষ ১২ জন ও নারী ৪ জন। তাদেরও ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি। জাপান থেকে ফেরত এসেছেন আটজন এবং তারা সকলেই পুরুষ।

আইএম জাপানের মাধ্যমে যাওয়া প্রথম ব্যাচের আটজন তিন বছরের মেয়াদ শেষে ছুটিতে দেশে ফিরে আসেন। লন্ডন থেকে ৫৩ জন ফেরত আসেন। তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। কী কারণে ফেরত আসেন তা উল্লেখ করা হয়নি। লিবিয়া থেকে ৩১৫ জন ফেরত আসেন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কী কারণে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই।

এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে মোট ১২৮ জন ফেরত আসেন। তাদের সকলেই পুরুষ। তারা কী কারণে দেশে ফিরে আসেন তা জানা যায়নি।

আরও পড়ুন

avertisements 2