বাংলাদেশ কি তবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র?
আউয়াল খান
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২০ | আপডেট: ০৭:৪৯ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জান-মাল-ইযযতের নিরাপত্তা, খাদ্য-পানীয়-চিকিৎসা-বাসস্থান ও স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা এবং সর্বোপরি অধিকতর উন্নত জীবন যাপনের জন্য রাষ্ট্র গঠিত হয়। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে এর কোনটাই কি খুঁজে পাওয়া যাবে? রাস্তায় বের হ’লে বোমাবাজ ও চাঁদাবাজদের আতংক, ঋণ নিতে গেলে সূদখোর ও অফিসে গেলে ঘুষখোরদের আতংক, বাজারে গেলে বিষ ও ভেজালের আতংক, আদালতে গেলে রিম্যান্ড ও কারাগারের আতংক, নেতাদের কাছে গেলে মিথ্যা আশ্বাস অথবা ক্যাডার লাগিয়ে স্বার্থ উদ্ধারের আতংক, র্যাব-পুলিশের কাছে গেলে আযরাঈলের আতংক, এভাবে সার্বিক জীবনে আতংক নিয়ে যে দেশের মানুষ সদা তটস্থ, সে দেশ কি সফল রাষ্ট্র? ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির, চাকুরী থেকে কর্মী ছাটাই, শ্রমিক-মজুরদের কর্মহীন জীবন, নারীর ইযযত ও মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, সর্বত্র দুর্বৃত্তায়ণ যে দেশকে আষ্টে-পৃষ্ঠে গ্রাস করেছে, সে দেশকে আমরা কি বলব? ‘একটি ফুলকে বাঁচাতে মোরা যুদ্ধ করি’- মুক্তিযুদ্ধের সেই গান এখন বেসুরো মনে হয়। পত্রিকা খুললেই বন্দুক যুদ্ধে র্যাব ও পুলিশের মানুষ হত্যা আর দুবৃত্তদের ককটেল ও পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পোড়ানোর খবর। ক্ষমতালোভী দু’টি দলের নেতা ও ক্যাডারদের হানাহানিতে দেশ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। উভয় দলই গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য লড়ছে। অথচ উভয় দলেরই সস্তা শিকার হ’ল এদেশের জনগণ। কথিত ক্রসফায়ারে মরছে সাধারণ মানুষ, পেট্রোল বোমায় পুড়ছে সাধারণ মানুষ, মিথ্যা মামলায় কারাগারে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
আমরা একটি কার্যকর ও সফল রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে দেখতে চাই। আমরা আমাদের জান-মাল ও ইযযত নিয়ে এদেশে নিরাপদে বসবাস করতে চাই। নেতাদের মারামারির দায় আমরা গ্রহণ করতে চাই না। পেট্রোল বোমায় দগ্ধীভূতদের কান্না আর কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্তান হারানো মায়েদের কান্না কি নেতা-নেত্রীরা শুনতে পান?