প্রযুক্তিই এখন মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করছে, কি হবে মানবতার?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:৫৪ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
যে প্রযুক্তি একসময় আমাদের সেবা করত, আজ মনে হচ্ছে সেই প্রযুক্তির সেবক ও দাসে পরিণত হয়েছি আমরা। এক সময় যা কল্পনাও করা যেত না এখন তা প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের হাতে মুঠোয়। নতুন প্রযুক্তির ডিভাইসগুলো আমাদেরকে সহজ ও ঝামেলামুক্ত জীবনের প্রতিশ্রুতি দিলেও আমরা কি সত্যিই ঝামেলামুক্ত হতে পেরেছি?
সাধারণ দৃষ্টিতে তাকালে প্রযুক্তিকে মানুষের উন্নতির একমাত্র অবলম্বন হিসেবে মনে হলেও বাস্তবতা সব সময় এমন বক্তব্যকে সমর্থন করে না। নবপ্রযুক্তি আমাদেরকে অনেক কিছু উপহার দিলেও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি করছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। আমরা প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি, আমাদের অজান্তেই আবেগ, সৃজনশীলতা এবং গভীর চিন্তাভাবনার অভ্যাস হারাচ্ছি।
যোগাযোগ প্রযুক্তির কথাই ধরা যাক। অবিরাম বিজ্ঞপ্তি ও নতুন নতুন বার্তা আমাদেরকে একটি অন্তহীন শৃঙ্খলে আটকে রেখেছে। আমাদের জীবনের মূল্যবান সম্পদ সময়কে এখন আর মূল্যবান হিসাবে দেখা হয় না, সময়টা যেকরেই হোক পার করাটাই যেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা যদি শান্তি বিঘ্নিত করেও হয়।
প্রযুক্তির উপর আমাদের নির্ভরতা আমাদের মানবিক পরিচয়কেও প্রভাবিত করেছে। মুখোমুখি যোগাযোগ ও কথোপকথন এখন সংক্ষিপ্ত বার্তা ও স্টিকার পাঠানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। জীবনে গতি আনার শ্লোগান দিয়ে আমরা আমাদের গভীর আবেগ-ভালোবাসা প্রকাশকে যান্ত্রিক করে ফেলছি।
সম্ভবত আমরা যাকে উন্নতি বলছি তা আমাদেরকে মানবতার পথ থেকে বিচ্যুত করছে। সহনশীলতা, সৃজনশীলতা এবং পারস্পরিক সম্পর্ককে বাদ দিয়ে যে মানবতার পথে হাঁটা যায় না তা আমরা ভুলতে বসেছি। প্রযুক্তিই আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে আধিপত্য বিস্তার করছে, আমরা নিজেরা ক্রমেই যন্ত্রে পরিণত হচ্ছি, হারাচ্ছি মনুষ্যত্ব।
ডিজিটাল যুগে আমরা উন্নতির পেছনে ছুটছি, কিন্তু সময় এসেছে কিছুক্ষণের জন্য থমকে দাঁড়ানোর। নিজেদেরকেই প্রশ্ন করতে হবে, আমরা যে উন্নতির পেছনে ছুটছি তা আমাদেরকে অমানুষ বানিয়ে ফেলছে নাতো?