avertisements 2

মাকে বাঁচাতে নিজেকে বিক্রির ঘোষণা কলেজছাত্রের!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪৬ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে শ্রমিক হিসেবে নিজেকে ১০ বছরের জন্য বিক্রির ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন আনোয়ারুল ইসলাম মামুন নামের এক যুবক। তিনি বান্দরবান সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। মাকে বাঁচাতে নিজেকে বিক্রির ঘোষণা কলেজছাত্রের!

গত ১২ অক্টোবর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় এসেছেন ওই ছাত্র।.

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আনোয়ারুল ইসলাম মামুন। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করে পরিবার চালিয়ে আসছেন তিনি। কিন্তু গত ৪ মাস আগে হঠাৎ করে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার মায়ের জরায়ু ক্যান্সার ধরা পরে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক এম এ আউয়াল এর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কেমো থেরাপি দেয়া হয়। পরে চিকিৎসা চলাকালে ক্যান্সার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। মামুন তার মায়ের চিকিৎসার জন্য ইতোমধ্যে ১৪ লাখ টাকা খরচ করে ফেলেছেন। নিজের সহায় সম্বল সব বিক্রি করে মামুন এখন নিঃস্ব।

পার্টটাইম চাকরি করে পরিবার চালানোর জন্য যে কাজটি তিনি করতেন মায়ের চিকিৎসায় সময় দিতে গিয়ে সেটিও হারিয়ে ফেলেছেন। এখন মায়ের চিকিৎসা করানোর মত কানাকড়িও তার কাছে নেই। আর ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা করাতে দরকার একসঙ্গে অনেক টাকা। তাই উপায় না পেয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে ১০ বছরের জন্য শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করে দেয়ার ঘোষণা দেন।

১০ বছর পর্যন্ত তিনি শারীরিক শ্রম দিয়ে হালাল উপার্জনের মাধ্যমে মায়ের চিকিৎসা করাতে চান। আর চিকিৎসার জন্য তার অগ্রিম টাকা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে তার এ স্ট্যাটাস দেখে অনেকে তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন।

এ বিষয়ে কলেজছাত্র আনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, পরিবারে আমি একমাত্র ছেলে; আমি গরিব ঘরের সন্তান। আমার মায়ের অবস্থা এখন খুবই খারাপ; তিনি এখন চট্টগ্রামের পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানে ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। খরচ যোগাতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমি নিজেকে ১০ বছরের জন্য শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। আমার মাকে সিলেটের একটি ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেখানে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাব। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার মায়ের জন্য সহযোগিতা করেন তাদের কাছে চির ঋণী থাকবো। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের গ্রামে অল্প কিছু জায়গা আছে প্রয়োজনে সেই শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে হলেও মাকে যদি বাঁচাতে কিছু অর্থ দিয়ে যারা সহযোগিতা করবেন তাদের টাকা আমি পরিশোধ করব।

তিনি আরও বলেন, সমাজের বিত্তবানরা চাইলে আমার ব্যক্তিগত বিকাশ ও নগদ নাম্বার ০১৩২১-১৯৯৬২৮ সহযোগিতা করতে পারেন। আর কেউ যদি আমাকে শ্রমিক হিসেবে কিনে নিতে চায় তাদের কাছে আমি বিক্রি হব বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, মামুন নামে ছেলেটি অত্যন্ত আবেগী; তার মায়ের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ করেছেন। আমিও দেখেছি মামুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে শ্রমিক হিসেবে দশ বছরের জন্য বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। সবাইকে এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানো অনুরোধ জানান তিনি।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2