বাবার মরদেহ শনাক্তে ডিএনএ দেওয়ার অপেক্ষায় ৬ মাসের শিশু
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ জুন,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০১ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বাঁশখালীর শেখেরখীল গ্রামের আবদুস সোবহান। বিয়ে করেছেন ২ বছর আগে। ৬ মাস বয়সী সন্তান রয়েছে তাদের। আগুনে পোড়া সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে কর্মরত ছিলেন সুপারভাইজার হিসেবে।
শনিবার রাতে যখন আগুন লাগে তখন ইমোতে ভিডিও কলে স্ত্রীকে আগুন দেখান। এরপর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রোববার দিনভর খোঁজাখুঁজি শেষে তার মরদেহ পাওয়া যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। তবে সে মরদেহ অন্য একটি পরিবার এসে তাদের স্বজনের বলে দাবি করেন। এ কারণে এখন ওই মরদেহ শনাক্ত করতে ডিএনএন নমুনা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে আবদুস সোবহানের ৬ মাস বয়সী শিশু। শিশু ফায়জারের সঙ্গে চমেক হাসপাতালে রয়েছে তার মা উম্মে কুলসুম এবং এক মামা।
সোমবার সকালে ফায়জার রহমানের মামা (কুলসুমের ভাই) বলেন, আগুন লাগার পর ভিডিও কলে কথা হচ্ছিল। তখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ আব্দুস সোবহান। খোঁজ না পেয়ে চমেক হাসপাতালসহ আশপাশের সব হাসপাতালে খোঁজা হয়েছে। চমেকের মর্গে একটা মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা আরেকজন এসে দাবি করে। এ কারণে এখন অপেক্ষা করছি ডিএনএ দেওয়ার।
এ সময় কুলসুম বলেন, শনিবার রাতে সর্বশেষ কথা হয় সোবহানের সঙ্গে। তিনি তখন বলেন, আমার সব স্বপ্ন শেষ। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে যাদের শনাক্ত করা যায়নি তাদের স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ সোমবার (৬ জুন)। এরপরই স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ডিএনএ সংগ্রহে এরই মধ্যে বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে জেলা প্রশাসনে সহায়তা সেলের পাশে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহযোগিতায় এ বুথ স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান জানিয়েছেন, নিহতদের মাঝে ২১ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এদের মাঝে রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অনেক মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাই নিহতদের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
এদিকে আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন। ঘটনাস্থলে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, র্যাব, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা।