অতিরিক্ত কান্নায় বিরক্ত হয়ে আমির হামজাকে শ্বাসরোধে হত্যা!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:১১ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
কুমিল্লার দেবিদ্বারে অতিরিক্ত কান্নায় বিরক্ত হয়ে আমির হামজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন শিশুটির আপন ফুপু স্বপ্না আক্তার। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। সোমবার দায় স্বীকার করে ৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন স্বপ্না।
জানা যায়, উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের আল আমিনের ছেলে ১৮ মাস বয়সের আমির হামজার মৃত্যু হয়। মৃত্যু ছয় মাস পর হত্যার রসহস্য উদঘাটন করে দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যার শিশু আমির হামজা মাটিতে বসে কান্না করছিলে। পাশেই রান্না করছিলেন তার আপন ফুফু স্বপ্না আক্তার। তখন শিশুটি অতিরিক্ত কান্না করায় স্বপ্না আক্তার বিরক্ত হয়ে গরম কাঠি দিয়ে প্রথমে শিশুটির গলায় আঘাত করে। পরে শিশুটিকে খাটের বিছানায় চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর নিজে বাঁচার জন্য খিচুনি রোগে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেয়।
পুলিশ জানায় আমির হামজার মা গার্মেন্সে চাকরি করেন। আর বাবা বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কাজ করতেন। বাড়িতে আমির হামজাকে তার ফুফুই দেখাশুনা করতো।
ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো: মাহবুবুর রহমান জানান, আমির হামজার মৃত্যুও পর তার ফুফুসহ পরিবারের লোকজন বলছিলেন খিচুনি রোগে তার মৃত্যু হয়। তখন দেবিদ্বার থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন তার মা সালমা বেগম। তখন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এস আই মোর্শেদ। তিনি চলে যাওয়ায় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তদন্তভার পরে আমার ওপর। গত ২৮ মে সকালে শিশুটির রিপোর্ট হাতে পেলে ঘটনায় ভিন্নদিকে মোড় নেয়। মেডিক্যাল রিপোর্টের সূত্র ধরে শুরু হয় অধিকতর তদন্ত ও পর্যালোচনা।
তিনি বলেন, গতকাল ৩০ মে রাতে শিশুটির ফুফু স্বপ্নাকে সন্দেহ ভাজন হিসেবে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের সাথে তিনি জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। এ ঘটনায় ওই রাতেই আগের অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলায় স্থানান্তর করে তাকে আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়।
শিশুটির দাদা মো: সুলতান আহমেদ (বাবুর্চি) জানান, আমির হামজার মা-বাবা আমাদের কাছে কুমিল্লায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার মা গার্মেন্সে চাকরি করতেন আর বাবা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কাজ করতেন। বাড়িতে আমির হামজাকে তার ফুফুই দেখাশুনা করতো। কেন তাকে হত্যা করলো আমি জানি না। আমরা এতদিন জানতাম খিচুনিতে আমির হামজার মৃত্যু হয়েছে।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আরিফুর রহমান জানান, শুধু কান্না করার জন্য একটি শিশুকে হত্যা করেছে তারই আপন ফুফু স্বপ্না আক্তার। কুমিল্লা ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক রোকেয়া বেগমের কাছে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। স্বপ্নাকে আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।