নোনা পানি ঢুকিয়ে মাছ চাষ: নষ্ট বোরোধান, আতঙ্কে কৃষক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ মার্চ,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৬:৪৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কক্সবাজারের চকরিয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে মিঠাপানির মাছ চাষের কথা বলে জলমহাল ইজারা নিলেও চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে জলমহালের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের কৃষকদের বোরোধান ক্ষেত।
জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ঢেমুশিয়া জলমহালটি চলতি বছর কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। তারা মাছ চাষের জন্য খালের একাধিক পয়েন্ট দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকিয়ে দিয়েছেন। প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনার ফলে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি প্রভাবশালী ওই মহলটি বদ্ধ জলমহালে ফের লবন পানি ঢুকাচ্ছে। এ অবস্থার ফলে বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষক জমিতে মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা অভিযোগ করেন, ঢেমুশিয়া জলমহাল থেকে মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিয়ে তারা অনেক বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে জলমহালের লোকজন মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের ৭টি ইউনিয়ন- ঢেমুশিয়া, পশ্চিম বড়ভেওলা, কোনাখালী, বদরখালী, বিএমচর, পুর্ববড় ভেওলা ও সাহারবিলের বেশিরভাগ এলাকার বোরোধান ক্ষেত লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রভাবশালী ইজারাদাররা স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরে মাছ চাষের জন্য বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, জলমহালে লবণ পানি ঢুকানোর কারণে অনেকটা নিরুপায় হয়ে তারা জমিতে লবণ পানির সেচ সুবিধা নিতে বাধ্য হয়েছেন। এতে বোরোধান ধানক্ষেত শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। ঘটনাটি কৃষি বিভাগের লোকজনকে অবহিত করা হলেও ঢেমুশিয়া জলমহালের লবন পানি প্রবাহ বন্ধে কোন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন কৃষকরা মুনাফার পরিবর্তে উল্টো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী বলেন, কৃষক বাধ্য হয়ে ঢেমুশিয়া বদ্ধ জলমহালের লবণাক্ত পানি সেচ কাজে ব্যবহার করছে। এ ঘটনায় প্রশাসন দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাছিম হোসেন বলেন, ঢেমুশিয়া বদ্ধ জলমহাল এখন কৃষক ও চাষের জন্য চরম হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ইজারাদাররা লবন পানি ঢুকাবেনা এমন আশ্বাস দিলেও পরে তারা ঠিকই এ কাজ করেছেন। ফলে কৃষক চাষাবাদের জন্য মিঠাপানির সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। এতে বোরোধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, কৃষককে মিঠাপানির সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা অবশ্যই জরুরি। যদি ঢেমুশিয়া জলমহালের ইজারাদাররা চুক্তি লঙ্ঘন করে লবণ পানি ঢুকিয়ে থাকেন তদন্তে প্রমাণিত হলে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে জলমহালটি মাছ চাষের জন্য দেওয়া ইজারা বাতিল করতে জেলা প্রশাসনকে সুপারিশ করা হবে।