আওয়ামী লীগে প্রার্থীর হিড়িক, বিএনপি সিদ্ধান্তহীন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:০৯ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে সরকারি দল আওয়ামী লীগে প্রার্থীর হিড়িক পড়েছে। আর বিএনপির এ উপনির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই। তবে জাসদ ‘নৌকায় চড়ে’ আসন পুনরুদ্ধার করতে চায়। জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতা না থাকলেও ন্যাপ, ইসলামিক ফ্রন্ট এবং বিএনএফ প্রার্থীরাও এই আসনে ফের লড়তে পারেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাসদ একাংশের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদল নৌকা প্রতীকে এ আসন থেকে টানা তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। এ নেতার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি উপনির্বাচনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এই আসনে এমপি হন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুর পর আরেকটি উপনির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা ফের নড়েচড়ে উঠেছেন। মাঠ ও দলের কেন্দ্রের সঙ্গে তারা যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। অনেকে মনে করেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এই উপনির্বাচনটি হতে পারে দুই বড় রাজনৈতিক জোটের মহড়াও। আওয়ামী লীগ সাবেক দুই এমপির পরিবারের কাউকে, নাকি নতুন কাউকে মনোনয়ন দেবে তা নিয়ে আলোচনা আছে স্থানীয়ভাবে। অন্যদিকে বিএনপি আছে এখনো দ্বিধায়। নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে কেন্দ্রের কোনো ‘সবুজ সংকেত’ মেলেনি বলে জানান দলটির দায়িত্বশীলরা।
ক্ষমতাসীনের মনোনয়ন প্রার্থিতায় সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন আছেন জোর আলোচনায়। অন্যদিকে সাবেক এমপি মঈন উদ্দিন খান বাদলের স্ত্রী সেলিনা বাদল গত উপনির্বাচনেও প্রার্থী হন। সেবার মনোনয়ন না পেলেও এবার তিনি বেশ আশাবাদী বলে জানা গেছে। মোছলেম উদ্দিনের ছোট বোন প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি নেত্রী ইয়াসমিন স্বর্গকে নিয়েও চলছে আলোচনা। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে তিনি সক্রিয় হয়েছেন।
ওয়ান ইলেভেনের সময়কালে ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ঢুকতে না দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ভূমিকা রাখেন এই নেত্রী। মোছলেম উদ্দিনের ছোট ভাই লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবসার উদ্দিন সেলিমও আছেন আলোচনায়। চউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুস ছালামের নামও আলোচিত হচ্ছে। তবে তার ছোট ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সৈয়দ নুরুল ইসলামের কথাও বলছেন অনেকে।
এ ছাড়া প্রার্থিতায় আগ্রহী গত চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি ও এফবিসিসিআই-এর প্রাক্তন পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের সুজন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবেক এমপি এম মোর্শেদ খানের আগ্রহ নেই এই নির্বাচনে। এলাকায় তার সমর্থকরা কেবল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
গতবারের প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানকে হামলা মামলায় কদিন পর পর থাকতে হয় আড়ালে। গতবার বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর নেতা ও বিজিএমইএ-এর সাবেক প্রথম সহসভাপতি আলহাজ এরশাদ উল্লাহকে ঘিরে সরব আলোচনা থাকলেও তিনি জানালেন, ‘বিগত নির্বাচনে বিএনপির অভিজ্ঞতা সুখকর নয়।’
উল্লেখ্য গত উপনির্বাচনকে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান ‘প্রহসনের নির্বাচন’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণ, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, কয়েকজন গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটে।