১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে রাষ্ট্র উল্টো দিকে যাচ্ছে- ড: আবুল বারকাত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ জুলাই,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০৯:২১ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
অজয় কর সম্প্রতি একুশে রেডিওর সাথে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের বিশিষ্ট আৰ্থিনীতিবিদ ও মুক্তিযোধ্যা প্রফেসর ড: আবুল বারকাত বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে রাষ্ট্র উল্টো দিকে যাচ্ছে’। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদের রেফারেন্স টেনে ড: বারকাত বলেন, জনগনের জন্য অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করার কথা রাষ্ট্রের। বাংলাদেশে রাষ্ট্র এর কোনোটাই করতে পারে নি। তার মতে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে রাষ্ট্র উল্টো দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি তিনজন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে একজন ছাত্র-ছাত্রী মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত।
এসব মাদ্রাসা ছাত্র-ছাত্রীরা প্রায় সকলেই দরিদ্র নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সকলের জন্যে গণমুখী, বিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করণের কথা থাকলেও সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সার্বজনীন এই শিক্ষা ব্যবস্থায় আনতে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। কোভিডের সাথে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ড: বারকাত বলেন, কিভাবে মূল সরকারের মধ্যে মৌলবাদের সরকার, মূল রাষ্ট্রের মধ্যে মৌলবাদের রাষ্ট্র সৃষ্টি হয় তা নিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
মৌলবাদের অর্থনীতি কি জিনিস, মৌলবাদের অর্থনীতি কিভাবে কাজ করে, বাংলাদেশে তাদের অর্থের উৎস কত এবং কোন কোন খাতে তাদের অর্থ বিনিয়োগ রয়েছে এসব নিয়ে তিনি প্রথম সেমিনার করেন ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ড: বারকাত বলেন, গণতন্ত্র যখন দুর্বল হয় তখন কোভিড - ১৯ জাতীয় মহামারী অবস্থায় মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় আতঙ্কের।
মানুষ হয়ে পরে হতাশ আর নিরাশা গ্রস্থ। হতাশা গ্রস্থ মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পরে ভাগ্যের উপর। বাংলাদেশে কোভিডের দুর্যোগ কালীন সময়ে আংটি বিক্রী বেড়ে যাওয়ার সাথে ভাগ্যনির্ভর মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবার একটি সংযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশে কোভিডে আতংকিত মানুষের অনেকেই আংটি কিনছেন কারণ তারা ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
ভাগ্যনির্ভর মানুষ ধর্মকে আঁকড়ে বাঁচতে চায়।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে দুর্বল করতে হলে যা কিছু করা দরকার কোভিড তার সবই করছে বাংলাদেশে। এতে রাষ্ট্র দুর্বল হলেও মৌলবাদী সংগঠনগুলি দুর্বল হচ্ছে না কারণ মৌলবাদী সংগঠনগুলি গত ৩০-৪০ বছর যাবৎ বাংলাদেশে ব্যাংক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মিডিয়া সহ প্রায় ১৫টি খাতে অর্থ বিনিয়োগ করে চলেছে। তিনি বলেন , মৌলবাদী সংগঠনগুলির লক্ষই হচ্ছে ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের দখল নেওয়া। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ধর্মকে আঁকড়ে থাকা এসব হতাশা গ্রস্থ মানুষকে সংগবদ্ধ করে ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলি বাংলাদেশে খোমেনীর মত অবস্থার সৃষ্টি করে ফেলতে পারে।