অর্থনৈতিক সংকটে অভিভাবকরা, বন্ধ হচ্ছে সন্তানদের স্কুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:০৯ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
স্বাধীনতার পর সব থেকে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাপক অস্থিরতার পর দ্বীপ দেশটি এখন শান্ত হলেও ব্যাপক বেকারত্ব আর উচ্চ দ্রব্যমূল্যের প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে পরিবারগুলোতে। খবর বিবিসির।
১০ বছরের মালকি এতই উচ্ছ্বসিত যে, ভোরে কোনোভাবেই আর বিছানায় থাকতে চাইছিল না। অন্য চার ভাইবোনের চেয়ে এক ঘণ্টা আগেই সে ঘুম থেকে উঠেছে, যাতে নখের লাল নেইলপলিশ তুলে ফেলতে পারে। তার এই উচ্ছ্বাসের কারণ, আবারও সে স্কুলে ফিরছে, সে জন্যই পরিপাটি হতে চায়।
তবে তার ভাইবোনের মনে সেই আনন্দ নেই। কারণ তাদের বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে। তার পরিবার এখন সবার পড়ালেখার খরচ চালাতে অক্ষম, এ জন্য শুধু সে-ই স্কুলে যাচ্ছে।
দেশের অর্থনৈতিক সংকটে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেলে ঠিকমতো সংসারই চালাতে পারছিলেন না মালকির মা প্রিয়ন্তিকা। তার মধ্যে পাঁচ সন্তানের পড়ালেখার খরচ চালানো দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে গেছে তার কাছে। উপায়ান্তর না দেখে তিনি ছেলেমেয়েদের পড়ালেখায় ইতি টানেন। সংসারের ব্যয় সামলাতে তার সন্তানদের নেমে পড়তে হয় আতশবাজি বিক্রির কাজে।
মূল্যস্ফীতি সর্বকালের সবচেয়ে উঁচু ৯৫ শতাংশে পৌঁছানোর পর শ্রীলঙ্কায় খাদ্যপণ্যের দামও পৌঁছে যায় রেকর্ড উচ্চতায়। কোনো কোনোদিন মালকির পরিবারের সবাইকে না খেয়েও থাকতে হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় স্কুল ফ্রি; কিন্তু সেখানে খাবার দেওয়া হয় না।
স্কুলে খাবারের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে কিছু কিছু স্কুলে যোগাযোগের পর তারা এখন পর্যন্ত কোনো সাহায্য না পাওয়ার কথা জানায়।
সিলন শিক্ষক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জোসেফ স্ট্যালিন মনে করেন, স্কুলের ব্যয় সামলাতে না পেরে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করা ক্রমবর্ধমান পরিবারগুলো সম্পর্কে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই উদাসীন।
ইউনিসেফ জানায়, সামনের মাসগুলোতে মানুষের পক্ষে খাবার জোগাড় করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা পরিবারগুলোকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। ফলে সারাদেশে আরও অনেক শিশু ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হবে বলেই মনে হচ্ছে।