কংগ্রেস সভাপতি কে এই মল্লিকার্জুন খাড়গে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:১৪ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ভারতের প্রাচীন রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। পাঁচ দশক পর আরেক দলিত সভাপতি পেল কংগ্রেস।
কর্নাটক রাজ্যের বিদারে ১৯৪৯ সালের ১২ জুলাই দলিত সম্প্রদায়ের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। শেঠ শঙ্করলাল লহোতি কলেজে আইন পড়ার পর ওকালতি শুরু করেন তিনি। কর্মজীবনের শুরুর দিকেই বহু শ্রমিক ইউনিয়ন মামলায় জয়লাভ করেন, পরে একপর্যায়ে কেন্দ্রের শ্রমিক নেতা হয়ে ওঠেন।
১৯৬৯ সালে কংগ্রেসের রাজনীতিতে নাম লেখান খাড়গে। সে বছরই গুলবার্গা নগর কংগ্রেসের সভাপতি হন তিনি। নির্বাচনি ক্যারিয়ারে কর্নাটক রাজ্যসভার গুলবার্গা আসন থেকে প্রথম ১৯৭২ সালে জয়ী হন তরুণ খাড়গে।
১৯৭৬ সালে কর্নাটক রাজ্য সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী হন খাড়গে। দু বছর পর ১৯৭৮ সালে গুরমিৎকাল আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো এমএলএ নির্বাচিত হন। সে বছর দেবরাজ উরস মন্ত্রিসভায় পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী হন। পরে একই আসন থেকে তিনি বেশ কয়েকবার এমএলএ নির্বাচিত হন। ১৯৮০ সালে গুন্দু রাও সরকারে রাজস্বমন্ত্রী হন। ১৯৮৫ সালে কর্নাটক রাজ্যসভার বিরোধী দলীয় ডেপুটি নেতা নিযুক্ত হন।
পরে ১৯৯০ সালে রাজস্ব, পল্লী উন্নয়ন ও পঞ্চায়েত রাজ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে বাঙ্গারাপ্পা মন্ত্রিসভায় ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। এরপর ১৯৯২ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত বিরাপা মৈলি সরকারেও মন্ত্রিত্ব পান তিনি। ২০০৫ সালে এসে কর্নাটক রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি হন খাড়গে।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্নাটক থেকে রাজ্যসভার নির্বাচিত সদস্য ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। এরপর থেকে গত ১ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি ভারতীয় পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে মনমোহন সিং সরকারের রেলমন্ত্রী এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ছিলেন।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতের রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলের সবাই অবশ্য ধরেই নিয়েছিলেন, এ নির্বাচনে খাড়গে জিততে যাচ্ছেন। ভোটের ফল প্রত্যাশামাফিকই হয়েছে। গান্ধী পরিবারের বাইরের সভাপতি বলা হলেও খাগড়েকে এ পরিবারের খুবই ঘনিষ্টজন হিসেবেই জানে সবাই।
গত সোমবার ভারতজুড়ে ৩৬ কেন্দ্রের ৬৭টি বুথে ভোটগ্রহণ হয়। এতে প্রতিপক্ষ শশী থারুরকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দেন তিনি। আজ বুধবার ভোটের ফলপ্রকাশ হলে দেখা যায়, ৯ হাজার ৩৮৫ ভোটের মধ্যে সাত হাজার ৮৯৭ ভোট পেয়ে প্রতিপক্ষ শশী থারুরকে পরাজিত করেছেন খাড়গে। শশী থারুর পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৭২ ভোট। বাতিল হয়েছে ৪১৬টি ভোট। অর্থাৎ ছয় হাজার ৮২৫ ভোটের ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন খাড়গে। ৮৪ শতাংশ ভোটই পেয়েছেন প্রবীণ এই নেতা।
এখন সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব বুঝে নেবেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। ২০১৯ সালে রাহুল গান্ধী পদত্যাগের পর থেকে মা সোনিয়া গান্ধী অন্তবর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন রাহুল।
ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে সিংহভাগ সময় কংগ্রেস নেহরু-গান্ধী পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন। মাত্র ছয়বার ভোট হয়েছে দলটির নেতা নির্বাচনে। ১৯৩৯ সালে প্রথমবারের ভোটে মহাত্মা গান্ধী সমর্থিত পি সিতারম্য নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের কাছে হেরে যান।