পরিবারতন্ত্রেই সর্বনাশ শ্রীলঙ্কার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৫ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪২ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
তীব্র অর্থনৈতিক দুর্দশায় বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার অবস্থা অনেকটা তলাবিহীন ঝুড়ির পর্যায়ে। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে ওষুধ, খাদ্য ,জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে পারছে না।
অন্যদিকে দেশটির ঘাড়ে চেপে বসেছে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ। এ অবস্থার জন্য ক্ষমতাসীন রাজাপক্ষে সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও পরিবারতন্ত্রকেই দায়ী করা হচ্ছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কাগজের অভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। হাসপাতালে ওষুধ না থাকায় রাজপথে বিক্ষোভে নেমেছেন চিকিৎসকরা। সার না থাকায় জমি চাষ করতে পারছেন না কৃষকেরা। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়া এবং আয় না থাকায় পর্যাপ্ত খাবার যোগাড় করতে ব্যর্থ হচ্ছেন কর্মজীবী পরিবারগুলো।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের খাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর অর্থনৈতিকভাবে কখনো মুখ থুবড়ে পড়েনি দক্ষিণ এশিয়ার এ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ‘পার্ল অব ইন্ডিয়ান ওশেন’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দেশটির অবস্থা এখন অনেকটা তলাবিহীন ঝুড়ির পর্যায়ে।
শ্রীলঙ্কার এ অবস্থার জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে সরকারের অযোগ্যতা আর দুর্নীতিকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কাকে শাসন করছে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী রাজাপক্ষে পরিবার। দেশবাসীকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়ে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেন তারা। এখন লঙ্কাবাসীর ঘাড়ে ৫১ বিলিয়ন ডলার ঋণের বোঝা চাপলেও উন্নয়নের ফসল ঘরে তুলেতে পারেনি।
এর মধ্যে করোনা মহামারিতে ধস নামে আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন খাতে। কমে যায় রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ও। ক্রেডিট রেটিংয়ের অবনতি হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকে। কমতে থাকে এফডিআই। অপরদিকে যোগ হয় আগের নেওয়া ঋণের কিস্তি। ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে শূন্য হয়ে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার। ২০১৮ সালের সাত বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ ঠেকেছে ২ বিলিয়ন ডলারে। অথচ এ বছরের মধ্যেই শোধ করতে হবে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের কিস্তি। এ পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলন। বিক্ষোভে উত্তাল হলেও ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।