যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন: ট্রাম্পকে ধন্যবাদ প্রধান উপদেষ্টার
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ এপ্রিল,শনিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:২০ এএম, ১৩ এপ্রিল,রবিবার,২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত অতিরিক্ত শুল্কের সিদ্ধান্ত যখন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করছিল, তখন আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানউপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে—ট্রাম্পের কাছে তার পাঠানো চিঠির কথা। বলা হচ্ছে, এই টিঠির পরই যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতিতে এসেছে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
এর আগে ট্রাম্প সরকার বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। ভারতের ক্ষেত্রে এ হার ছিল ২৭ শতাংশ পর্যন্ত।
এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ধরনের শুল্ক-যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী মন্দা এবং খাদ্যসংকট সৃষ্টি করতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে, ড. ইউনূস সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাঠান।
চিঠিতে তিনি অনুরোধ করেন, অন্তত ৯০ দিনের জন্য অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত রাখা হোক, যেন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরি হয়।
চিঠি পাঠানোর মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানান—চীন ছাড়া অন্য দেশগুলোর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ভারতের ক্ষেত্রেও শুল্কহার কমিয়ে আনা হয়।
এই সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা একটি বড় ‘নীতিগত মোড় পরিবর্তন’ হিসেবে দেখছেন। আর এই ঘোষণার পেছনে ড. ইউনূসের প্রত্যক্ষ প্রভাবের কথা বলছেন তারা।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, এই সিদ্ধান্তে ড. ইউনূসের অবদান ছিল প্রত্যক্ষ। কিছু প্রতিবেদন বলছে, তিনি বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ পরামর্শকদের একজন হিসেবে কাজ করছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ড. ইউনূসেকে অভিহিত করছে—“দ্য ম্যাজিক ম্যান” নামে।
এদিকে ঘটনার পরদিন ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম Truth Social-এ লেখেন—
“গত কিছুদিন ধরে আমি বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। আজ সকালে এক পুরোনো বন্ধুর পরামর্শ মনে পড়ে গেল, আর তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।”
অনেকে মনে করছেন, এখানে ট্রাম্প ‘পুরোনো বন্ধু; বলতে ড. ইউনূসকেই ইঙ্গিত করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পরপরই বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক সাড়া পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি প্রধান প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারমূল্য একদিনেই প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার বেড়ে যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও তাদের পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য পিছিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে শুল্ক আরোপ ও স্থগিত ঘোষণার পর এখন বিশ্ব রাজনীতির অঙ্গনে আলোচিত নাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বলা হচ্ছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেবল একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ নন, বরং তিনি হয়ে উঠেছেন প্রভাবশালী এক আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক। তার প্রভাবশক্তির গুণেই আপাতত বিশ্ব অর্থনীতি কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠেছে, ড. ইউনূস কি শুধু একজন অর্থনীতিবিদ? নাকি এখন তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্ব রাজনীতির এক ক্ষমতাধর শক্তি?