লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল: জীবন বাঁচাতে গাড়ি ফেলে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা, নিহত ৫
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৫ | আপডেট: ০২:১৭ এএম, ১০ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে সৃষ্ট দাবনল নিয়ন্ত্রণে আসেনি, বরং আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে বহু ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি-গাড়ি ফেলেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন বাসিন্দারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই পরিস্থিতিকে হলিউডের সিনেমার দৃশ্যের সাথে তুলনা করছেন।
এখন পর্যন্ত প্যালিসেডস, ইটন, হার্স্ট ও উডলিতে পাঁচজন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি অবকাঠামো পুড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারির) লস অ্যাঞ্জেলেসে আগুন লাগে। লাগার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ঝোড়ো বাতাসের কারণে ভয়াবহ হয়ে ওঠে। সেই আগুন লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের অভিজাত এলাকা প্যাসিফিক পলিসেডসের দিকে ধেয়ে আসতে থাকে।
আগুন নেভাতে ১ হাজার ৪০০ দমকলকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। অত্যাধুনিক সব সরঞ্জাম নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছেন তারা। এরপরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না আগুন।
শহরের পশ্চিমে ছোট একটি এলাকায় দাবানল শুরু হলেও মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এতে প্রায় ৩ হাজার একর এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কমপক্ষে ৩০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একজন বাসিন্দা বলেছেন যে দমকলকর্মীরা লোকজনকে তাদের গাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে।
প্যাসিফিক পলিসেডস এলাকায় জেনিফার অ্যানিস্টোন, ব্রাডলি কুপার, টম হ্যাঙ্কস, রিজ উইদারস্পুন, অ্যাডাম স্যান্ডলার, মাইকেল কিটনসহ অনেক হলিউড তারকার বাড়ি রয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু শহরের সীমান্তবর্তী প্যাসিফিক পলিসেডস এলাকার এক পাশে সান্তা মনিকা পাহাড় এবং অন্যদিকে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের সৈকত। উপকূল ধরে যে মহাসড়ক গেছে, সেটিই শহর থেকে বেরোনোর প্রধান পথ। আগুনের শিখা এগিয়ে আসায় এই মহাসড়ক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগও সীমিত হয়ে এসেছে।
মার্শা হোরোভিৎজ নামের এক বাসিন্দা বলেন, অগ্নিনির্বাপককর্মীরা লোকজনকে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে বলছেন। কারণ দমকা হাওয়াসহ আগুনের শিখা কখনো কখনো ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ধেয়ে আসছে।
মহাসড়কের একটি এলাকায় গাড়ি রেখেছেন বহু মানুষ। সেদিকেই আগুন আসছে বলে মার্শা হোরোভিৎজ জানান। প্যাসিফিক পলিসেডসের আরেক বাসিন্দা এবিসি নিউজকে বলেন, উদ্ধার তৎপরতার কথা জানতে পেরে তিনি হলিউডে নিজের কাজের জায়গা থেকে দ্রুত বাসায় চলে আসেন।
গাড়ি ফেলে তিনি বাসায় ছুটে যান নিজের বিড়ালটিকে রক্ষা করার জন্য। যখন নিরাপদ এলাকার জন্য ছুটছিলেন, সে সময় জ্বলতে থাকা পামগাছের একটি টুকরা তাঁর ওপর এসে পড়ে। নাম প্রকাশ না করে ওই নারী বলেন, ‘এটা ভয়ানক পরিস্থিতি। ভৌতিক সিনেমার মতো অবস্থা। আমি চিৎকার ও কাঁদতে কাঁদতে রাস্তায় নেমে এসেছি।’