আল কাদির ট্রাস্ট মামলা কী? ইমরানের সঙ্গে কী সম্পর্ক? কেন গ্রেফতার?
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৯ মে,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:১৫ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খানকে। তা নিয়ে তুলকালাম পরিস্থিতি গোটা শহরে। পুলিশ জানাচ্ছে, আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ইমরানকে।
এ মামলায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, তার স্ত্রী এবং তেহরিক-ই-ইনসাফের অন্যান্য নেতাদের যোগ রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। ঘটনাস্থলের যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে উর্দিধারীরা ইমরান খানকে টানতে টানতে একটি পুলিশের গাড়িতে নিয়ে তুলছে। গোটা চত্বরে শ’য়ে শ’য়ে পুলিশ। ইমরানকে যখন পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় পুলিশের সঙ্গে ইমরান-সমর্থকদের ধ্বস্তাধস্তির চিত্রও প্রকাশ্যে এসেছে।
তেহরিক-ই-ইনসাফের তরফে টুইটার হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ইমরানের আইনজীবী চোট পেয়েছেন এবং তার চিকিৎসা চলছে। ইমরানের দলের দাবি, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট চত্বরে আহত হয়েছেন ইমরানের আইনজীবী। আজকের দিনটিকে পাকিস্তানের গণতন্ত্রের জন্য একটি কালো দিন বলেও টুইটারে সরব হয়েছে তেহরিক-ই-ইনসাফ। এদিকে ইমরানের গ্রেফতারির পর গোটা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে পুলিশ। তেহরিক-ই-ইনসাফের তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে যে মারধরের অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেই দাবিও উড়িয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদ পুলিশ। পুলিশের দাবি, ইমরান খানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্যই তার গাড়িটি ঘিরে রাখা হয়েছিল।
কী অভিযোগ ইমরনের বিরুদ্ধে?
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে মামলা চলছে। তার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির মামলাও। অভিযোগ, ইমরান যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় এই দুর্নীতি হয়েছে। ইসলামাবাদ পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, মঙ্গলবার আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ইমরানকে।
কী এই আল কাদির ট্রাস্ট মামলা? এ আল কাদির ট্রাস্টের যৌথ মালিক ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। মূলত আল-কাদির বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য জমি সংক্রান্ত বিষয়ে এ মামলা। মামলায় অভিযোগ রয়েছে ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশেরা বিবি এবং সংগঠনের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ইমরান যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক বাণিজ্যিক গোষ্ঠীর সঙ্গে বোঝাপড়া হয়েছিল। আর সেই বোঝাপড়ার জন্য পাকিস্তান সরকারের ক্ষতি হয়েছিল ৫ হাজার কোটি রুপি। যা পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতিকে আরও ভেঙে দিয়েছিল।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজ়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) থেকে পাকিস্তান সরকারকে পাঠানো ওই ৫ হাজার কোটি রুপি ইমরান খান এবং তার মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন মন্ত্রী অপব্যবহার করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এ আল কাদির বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির নামে সোহাওয়ার মৌজা বাকরালার ৪৫৮ কানাল জমির (৫৭.২৫ একর) জন্য নিজেদের প্রয়োজন মতো সুবিধা নিয়েছিলেন তেহরিক-ই-ইনসাফের একাধিক নেতা।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ জানাচ্ছেন, এর আগেও একাধিকবার নোটিস পাঠানোর পরেও আদালতে হাজিরা এড়িয়েছেন ইমরান খান। জাতীয় রাজস্ব ক্ষতির জন্য ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলটি ব্যুরোর তরফে গ্রেফতার করা হয়েছে ইমরানকে। ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (রাওয়ালপিন্ডি) থেকে যে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি অর্ডিনেন্স, ১৯৯৯-এর ৯(এ) ধারায় দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে রয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। সেই কারণেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।