avertisements 2

‘আদানিকে দেশ ছেড়ে পালানোর আগে গ্রেপ্তার করা উচিত’

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০১:১০ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি বিশেষ প্রতিবেদনের পর বেশ ভালো বিপদেই পড়েছেন ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি। আদানিগোষ্ঠীর শেয়ারমূল্যে রীতিমতো ধস নেমেছে। তার বিরুদ্ধে শেয়ার দর ও আর্থিক লেনদেনে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে আদানি গ্রুপের শেয়ারের দাম মুখ থুবড়ে পড়েছে।

আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্পর্ক মধুর ছিল কয়দিন আগেও। দরপত্রের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি পর্যটন কেন্দ্র তাজপুর। সেখানে গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজও পেয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। গত বছরের ডিসেম্বরে এসে তারা এলাকাও দেখে গেছেন। কিন্তু এরই মধ্যে সব থমকে গেছে। 

এক সপ্তাহ আগের ছবিতেও দেখা গেছে গৌতম আদানির সামনে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে পশ্চিবঙ্গ সরকারের সম্পর্ক ভালোই ছিল। কিন্তু আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের পরেই সম্পর্ক আর ভালো যাচ্ছে না। 

এখন সেই গৌতম আদানির বিরুদ্ধেই অবস্থান করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদানি ইস্যুতে মুলতুবি প্রস্তাব পর্যন্ত আনলেন তৃণমূল সাংসদ গৌতম রায়। মার্কিন শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আদানি গোষ্ঠী শেয়ারের ভ্যালুয়েশন অনায্যভাবে বাড়িয়েছে। তাদের অস্বাভাবিক অঙ্কের দেনা আছে বলেও দাবি তোলা হয়। গত ২৪ জানুয়ারির সেই প্রতিবেদনেই ধস নেমেছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। মাত্র ৫ দিনে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার বাজার থেকে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে যায়। যদিও আদানি গোষ্ঠী পাল্টা জানিয়েছে, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে তাতেও কাজ হয়নি। বিনিয়োগকারীরা তাদের  শেয়ার বেচে দেওয়া কমাননি।

নবান্নে মমতা-আদানি সাক্ষাত্কার করেছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সেই ছবিও প্রকাশ হয়েছে। সেই ছবি বিষয়ে   বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার (আদানি) সাথে একটা গোপন আঁতাত করেছিলেন। আমি তাজপুর বন্দর নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। ২৫,০০০ কোটি রুপি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। ১০ লাখ চাকরি দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতির এবার কী হবে?’

বিগত কয়েক মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর সম্পর্ক ভালোই চলছিল। মাস কয়েক আগে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল গৌতম আদানিকে। দরপত্রের মাধ্যমে রাজ্যের হেভিওয়েট তাজপুর বন্দর প্রকল্পও জিতে নেয় আদানি গোষ্ঠী। রাজ্য সরকারের বিজয়া সম্মিলনীতেই আসেন গৌতম এর ছেলে করণ আদানিও। তার হাতে তাজপুর বন্দরের নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

আদানির শেয়ারের অবস্থা ভালো না। দ্রুত টাকা হারাচ্ছে আদানি গোষ্ঠীর সাত সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না নিয়েই বলেন, ‘কালকে তো প্রায় সরকার পড়ে যাচ্ছিল। কেন পড়ে যাচ্ছিল? শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। এবার কাউকে কাউকে অনুরোধও করা হচ্ছে। আমরা জানি তারা কারা। নামগুলো বলে আমি আর তাদের দুর্বিসহ করতে চাই না।’

তৃণমূল এমপি সুখেন্দুশেখর রায়ও বলেন, ‘ইডি, সিবিআইয়ের মতো যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলো বিরোধীদের পিছনে ক্ষ্যাপা কুকুরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের ছায়া পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীকে স্পর্শ করতে পারল না। কেন পারল না?’

এরপরেই  সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত্। কিন্তু তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধাররা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন তাই তাদের গ্রেপ্তার করা উচিত। পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা উচিত। তাদের বিরুদ্ধে সমস্ত এয়ারপোর্টে লুক আউট নোটিশ জারি করা উচিত। এমনকি ইন্টারপোলকেও সতর্ক করা দরকার।’

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2