স্বাস্থ্য কথা
অহেতুক পেইনকিলার খাওয়া উচিত নয়
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৩ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:৩৪ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
চিকিৎসকরা একটা জিনিস বারবার বলে থাকেন, যেটা আমরাও সবাই শুনেছি। তা হলো, অকারণে মুড়ি-মুড়কির মতো পেইনকিলার খাওয়া, বা পেনকিলারের অভ্যেস তৈরি করে ফেলা একেবারেই উচিত নয়। এর কারণ কী, সেটা এবার জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত, মানুষের শরীর এবং মস্তিষ্ক এমনভাবেই তৈরি, যে কোনো একটা পদার্থের দ্বারা যদি ক্রমাগত তাকে আঘাত করা হয়, তাহলে শরীরও নিজেকে তেমনভাবেই সইয়ে নেয়। সেই আঘাত তার গা-সওয়া হয়ে যায়। পেইনকিলারও যদি ক্রমাগত খেতে থাকি, তাহলে শরীরের ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। অর্থাৎ, যে ব্যথা আগে তিনটে পেইনকিলারে কমে যেত, ক্রমাগত খেতে খেতে দেখা যায়, সেই একই ব্যথায় ছটা পেইনকিলারেও কাজ হচ্ছে না। এগুলো সবটাই হয় রিসেপ্টর মডিফিকেশনের ফলে। নিউরাল পাথওয়েগুলো অ্যাডজাস্ট হয়ে যাওয়ার জন্য। এসবের ফলে নির্দিষ্ট ডোজে তার কার্যকারিতা দেখাতে পারে না। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে, ‘রেজিস্ট্যান্স টু দি অ্যানালজেসিক এফেক্ট অব পেইনকিলারস’। দরকারের সময় পেইনকিলার খেলেও
যে কাজ হয় না, এটা তার বড় কারণ।
দ্বিতীয়ত, কেউ যদি দীর্ঘ সময় ধরে পেইনকিলার খান, তাহলে তার কিডনির ওপর খুব খারাপ প্রভাব পড়ে। দেখা গেছে, এ রকম ক্ষেত্রে অনেক সময় কিডনিতে অ্যাকিউট টিউবুলার নেক্রোসিস বা অ্যাকিউট ইন্টারস্টিশিয়াল নেফ্রাইটিস এই জাতীয় রোগ হয়। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে পেইনকিলার খেয়ে যাওয়ার ফলে অনেক সময়ই তা পর্যাপ্ত পরিমাণে কিডনি থেকে বেরতে পারে না। কিডনিতেই জমে থাকে। ফলে কিডনির এমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, যার জন্য পরে ডায়ালাইসিস নিতে হতে পারে। কিডনির সাময়িক ক্ষতি, যা পরে দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে এর অন্যতম বড় কারণ কিন্তু পেইনকিলার। বেশি পেইনকিলার খেলে লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অর্থাৎ লিভার খারাপ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা, ক্রনিক লিভার ডিজিজ বা অ্যাকিউট হেপাটিক ইনজুরি হতে পারে। অনেক সময়ই দেখা গেছে, অতিরিক্ত পেইনকিলার খাওয়ার জন্য অ্যাকিউট হেপাটিক ফেলিওর হয়ে গেছে। পেইনকিলার লিভারকে এতটাই চাপ দিয়েছে, লিভার ফেল করেছে। লিভার এবং কিডনির ওপর পেইনকিলারের যে একটা অদ্ভুত খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, এর জন্যও ইচ্ছামতো, বিনা প্রেসক্রিপশনে পেইনকিলার খাওয়া একদম চলবে না। এটা সত্যি, যে কিছু ক্ষেত্রে পেশেন্টদের পেইনকিলার না দিয়ে উপায় থাকে না চিকিৎসকদের। কিন্তু কাকে কোন পেইনকিলার, কতটা ডোজে দেবেন সেটা একমাত্র চিকিৎসকই ঠিক করে দেবেন।