অনলাইন জুয়ায় আসক্ত, বাধা দেওয়ায় ফুফুকে হত্যা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:১৬ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় স্কুলশিক্ষিকা রোকসানা খানমকে (৫২) শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার দায়ে ভাতিজা নওরোজ জাবিদ নিশাতকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ
সোমবার (৭ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে নিশাতকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে একই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ শহরের হাউজিং ডি ব্লকের ২৮৫ বাসার দ্বিতীয় তলায় শয়ন কক্ষ থেকে ওই শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রোকসানা খানম (৫২) কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং স্টেটে ডি ব্লকের ২৮৫নং বাসার দ্বিতীয় তলায় একা থাকতেন। তিনি কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান যশোর চৌগাছা উপজেলা এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক হিসাবে কর্মরত থাকায় তিনি যশোর থাকতেন।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি নিহত রোকশানা খানমের ভাই মৃত এ কে এম নূরে আসলামের ছেলে নওরোজ কবির নিশাত (১৯)। তারা শিক্ষিকা যে ভবনে থাকতেন সেই একই ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় থাকতেন। নিঃসন্তান হওয়ায় নিশাতকে রোকশানা নিজের ছেলের মতো করে লালন-পালন করতেন।
নিহতের স্বামী জানান, ১৯৯৭ সালে তাদের বিয়ে হয়। তবে তাদের কোনো সন্তান নেই। তারপরেও পারিবারিক কোনো কলোহ কিংবা মনোমালিন্য ছিল না। চাকরির কারণে রোকসানা কুষ্টিয়ায় থাকত ও আমি যশোর থাকতাম। রোববার তার সঙ্গে আমার কথা হয় যে, সোমবার সকালে সে বিদ্যালয়ের কাজে যশোর শিক্ষা বোর্ডে যাবে।
তিনি আরও জানান, আমি সোমবার সকাল ৯টার দিকে ফোন দিলে সে ফোন রিসিভ করেনি। পরে ভাতিজা নওরোজ কবির নিশাত আমাকে ফোন দিয়ে বলে ফুপুর রুম ভেতর থেকে আটকানো এবং ডাকলে কোনো সাড়া দিচ্ছে না। তারপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে দেখে রোকসানা বিছানার ওপরে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত পড়ে আছে।
কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন জানান, নিশাতের অনলাইন বেটিং জুয়ায় আসক্তি আছে। এ কারণে তিনি ফুফুর কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিতেন। ফুফু তাকে যে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন, সেটাও বিক্রি করে জুয়া খেলেছেন। জুয়া নিয়ে বকাবকি করায় নিশাত তার ফুফুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। পরে রোববার সন্ধ্যায় রোকসানা বাড়ির ছাদে উঠলে সেই সুযোগে একটি রুমে ঢুকে আত্মগোপন করেন নিশাত। ফুফু ঘুমিয়ে পড়লে রোববার রাত দেড়টার দিকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল জানান, সোমবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ভাতিজা নিশাতকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শিল ওই বাসার ফিফ্ট ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। নিশাত মাদকাসক্ত এবং অনলাইন জুয়া খেলায় আসক্ত ছিল।