আসামিদের ফাঁসাতে লোহা দিয়ে নিজের বুক ছিদ্র করে গুলিবিদ্ধের ভান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ অক্টোবর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৩৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নরসিংদীতে নিজের বুক ছিদ্র করে গুলিবিদ্ধ হওয়ার নাটকে নিজেই ফেঁসে গেছেন হত্যা মামলার সাক্ষী এক যুবক।
শনিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর পুশিল সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল-আমিন মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০১৫ সালে নরসিংদীর শিবপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে হত্যার শিকার হন পুটিয়া ইউপি সদস্য আরিফ পাঠান। পরে এই হত্যা মামলার সাক্ষী সজিব মিয়া গত ১১ অক্টোবর আদালতে এসে সাক্ষ্য দেন। পরদিন হত্যা মামলার চার আসামির নাম উল্লেখ করে জীবননাশের হুমকিতে আছেন দাবি করে মাধবদী থানায় জিডি করেন তিনি। এরপর শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকায় নির্জন একটি পুকুর পাড়ে গিয়ে মামুন নামে তার বন্ধুর সহায়তায় ছোট চাকু দিয়ে নিজের বুকের ডান পাশে নিজেই ছিদ্র করে তার ভেতরে লোহার ছোট টুকরা ঢোকান সজিব। এ সময় ঘটনার পর সজিব তার বন্ধু মামুনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
এদিকে হাসপাতালে এসে স্বজন, ডাক্তার ও সাংবাদিকদের সামনে সজিব দাবি করেন, ইউপি সদস্য হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেওয়ায় ওই মামলার আসামিরা তাকে গুলি করে। এ ঘটনা শোনার পর চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে কোনো প্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়াই আহত সজিবের বুকের চামড়ার নিচ থেকে লোহার টুকরো বের করে তাকে ছাড়পত্র দেন চিকিৎসক। এ অবস্থায় আসামিদের গুলিতে সাক্ষী আহত হওয়ার খবরে জেলা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। ঘটনা সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজসহ সংগ্রহ ছাড়াও বিষয়টি বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন জানান, তদন্তে পুলিশ দেখতে পায়, সজিবের পরনে থাকা শার্টের ছিদ্রের সঙ্গে শরীরের যে স্থানে গুলি লেগেছে বলে দাবি করা হয়েছে সেই স্থানটি মিলছে না। এসব কারণে সজিবের দাবি নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে সজিব মিয়াকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা বন্ধু মামুম মিয়াকে জিজ্ঞাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন- মামলার আসামিদের ফাঁসাতেই নিজের বুকে ছিদ্র করে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভান করেছেন সজিব। এ ঘটনায় সজিব মিয়া ও মামুমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।