১৯ লাখ টাকা দালালের পকেটে, তিন মাস পর লাশ হয়ে দেশে ফিরলেন একুয়ান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৩২ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
একুয়ান ইসলাম (বিদেশ যাত্রার আগে এবং লিবিয়ায় অবস্থানের সময়কার ছবি)
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা গ্রামের কৃষক তরিকুল ইসলাম তার ছেলে একুয়ান ইসলামকে (১৯) জমি বিক্রি করে দালালকে ১৯ লাখ টাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হল না। তিন মাস পর ইতালি যাওয়ার বদলে ছেলের প্রাণহীন দেহ এলো বাড়িতে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মরদেহ গ্রামে এলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতরণ ঘটে। কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকজন।
এলাকাবাসী ও একুয়ানের পরিবারের লোকজন জানান, গত বছরের মার্চ মাসে একই গ্রামের লিবিয়ায় অবস্থানরত দালাল আলী হোসেনের মাধ্যমে চার লাখ টাকায় লিবিয়া যায় একুয়ান। সেখানে পৌঁছার পর দালাল চক্র তাকে আটক করে অমানবিক নির্যাতন চালায়। মাফিয়ার কথা বলে প্রাণ রক্ষা করার জন্য ১০ লাখ টাকা পাঠায় একুয়ানের পরিবার। পরে আরও ৫ লাখ টাকা দিয়ে তাকে ইতালি পাঠানোর চুক্তি হয় দালাল আলী হোসের সঙ্গে।
গত ১৬ জুন অবৈধভাবে সাগরপথে ইটালি যাওয়ার পথে রহস্যজনক মৃত্যু হয় একুয়ানের। এ খবর জানার পর ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। অন্যদিকে দালাল আলী হোসেনের বাবা মা গ্রাম ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় তার মরদেহ দেশে আসে। পরে শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর গ্রামের বাড়িতে আসে তার মরদেহ।
একুয়ানের বাবা তরিকুল ইসলাম জানান, পরিবারের সচ্ছলতা আনতে জায়গা জমি সব বিক্রি করে করে তিন কিস্তিতে দালাল আলী হোসেনের বাবা শ্রীধরপাশা গ্রামে বসবাসকারী আবুল মিয়া ও মা আসমা বেগমের কাছে ১৯ লাখ টাকা দেই। আমার ছেলেকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের কাছে সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে। আমি দালাল আবুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করব।
একুয়ানের চাচা ফজলু মিয়া বলেন, দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে একুয়ান ছিল সবার বড়। অভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনতে দালালদের প্ররোচনায় জমি বিক্রি করে লিবিয়া যায়। সেখানে তাকে মারধর করায় তাকে মাফিয়া চক্রের কাছ থেকে বাঁচাতে ১০ লাখ টাকা এবং ইতালি পাঠানোর জন্য আরও ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু লাশ হয়ে ফিরল সে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, একুয়ানের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।