শিক্ষক হত্যাকারী ছাত্র জিতু এলাকায় কিশোর গ্যাং এর ‘দাদা ’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৯ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৪০ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
চারদিনেও আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যায় মূল অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম জিতুসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এনিয়ে মঙ্গলবারও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকার মানুষ। পুলিশ বলছে, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলামকে সবাই চিনতে ‘জিতু দাদা’ হিসাবে। তার নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং চলতো। এই গ্রুপের সবার বসয় প্রায় ১৭ থেকে ১৮ এর ভেতর।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জিতু আসলে অনেকটাই বেপরোয়া। তার সঙ্গে স্কুলের ছেলেদের চেয়ে বাইরের ছেলেদের চলাচল বেশি ছিল। অনেক রাত পর্যন্ত সে বাইরে থাকতো। জিতুকে সবাই ‘জিতু দাদা’ বলেই চিনে। তার ফেসবুকেও জিতু দাদা নাম রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঘটনার দিন সিসি ক্যামেরা অকার্যকর রাখতে জিতু নিজেই বিদ্যুতের মূল সুইচ বন্ধ রাখে। স্কুলটির এক পরিচালকের আত্মীয় হয় জিতু। সেই ক্ষমতাই জিতুর ওপর কেউ কথা বলতে পারতো না। জিতু নানা অপকর্ম করে বেড়ায়।
স্কুলের আরেক শিক্ষক জানান, সহকর্মী উৎপল আঘাতের পর পড়ে যাচ্ছিলেন। তাই তাঁকে ধরতেই জিতুকে ধরেও তখন ছেড়ে দিতে হয়েছে। পরে আরও শিক্ষকেরা উৎপলকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে জিতু সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এদিকে, মঙ্গলবার সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার না করা হলে দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচির গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
এ সময় শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ভারে কলেজ শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যা, নড়াইলে কলেজ অধ্যক্ষ স্বপন কুমারকে নাজেহাল বর্বরতার নিষ্ঠুরতম উদাহরণ। এই বর্বরতা মেনে নেওয়া যায় না।
অন্যদিকে, শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের হত্যাকারীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ইপিজেড-আশুলিয়া-টঙ্গী সড়কে বিক্ষোভ করে হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং স্থানীয় অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন থেকে নিহত ওই শিক্ষকের সহকর্মীসহ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ঘাতক ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা কিশোর গ্যাংমুক্ত এলাকার দাবিসহ মোট ছয় দফা দাবিও জানিয়েছে।
মানববন্ধন থেকে শিক্ষকরা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গেল শনিবার দশম শ্রেণীর ছাত্র জিতু ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক জানিয়েছেন, গত রোববার জিতুসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নিহত উৎপলের ভাই অসীম কুমার সরকার মামলা করেছেন। আসামিকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।