বাবা-মা গরিব তাই তামান্নার চাওয়াটা অপূর্ণই রইল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:৫৮ এএম, ৩১ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
কলেজছাত্রী তামান্না
কলেজছাত্রী তামান্না বেগম দরিদ্র বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তাঁর মা নেহার বেগম সৌদি আরবে কাজ করেন। বাবা কৃষিকাজ করেন। তাঁরা আমতলীর হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
তামান্না আশা ছিল একদিন বিয়ে করে সংসার পাতবেন। তাঁর সেই সংসার হবে মনের মানুষের সঙ্গে। দেড় বছর আগে আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের মেখলেছুর রহমানের ছেলে ফল ব্যবসায়ী সুজন হাওলাদারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁর। সম্প্রতি এ সম্পর্কের কথা জেনে যায় দুটি পরিবার। আলোচনা করে পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। ১০ জুন এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
তামান্নার সেই আশা পূরণ হয়নি। আর কোনো দিন পূরণ হওয়ারও নয়। কারণ, না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। গতকাল শনিবার সকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাচ্চু মোল্লা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, 'মোর মাইয়াডারে বিয়ার আশ্বাস দিয়া সব শ্যাষ কইর্যা দিছে সুজন। বিয়ার তারিখ দিয়াও সুজনের খালা মাহফুজা বেগম মোরা গরিব এবং মাইয়ার মায় বিদেশে থাহে হেই লইগ্যা বিয়া ভাইঙ্গা দেয়। এ খবর পাইয়া মোর মাইয়া বিষ খায়।'
জানা গেছে, ১০ জুন বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও সেদিনই সুজনের খালা বিয়ে ভেঙে দেন। এরপর থেকে তিনি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। গত সোমবার বিয়ে হবে না বলে তাঁকে জানিয়ে দেন সুজন। এ খবর পেয়ে ওই দিনই বিষপান করেন তামান্না। পরে তাঁকে শেবাচিমে ভর্তি করা হয়।
সুজন হাওলাদার বলেন, শুক্রবার বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে কী কারণে তামান্না বিষপান করেছেন তা তাঁর জানা নেই।
মাহফুজা বেগম দাবি করেন বলেন, 'বিয়ার তারিখ অইছিল। মাইয়ার বাবা-মা গরিব তাই তারা বিয়া করাতে রাজি না। মেয়ে কী কারণে বিষ খেয়েছে তা তিনি জানেন না।'
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন বলেন, মা বিদেশে থাকে বলে বিয়ে ভেঙে দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।