প্রেমের নির্মম পরিণতি: প্রেমিকের হাতেই প্রাণ গেল কাকলির
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৮ এএম, ১৯ এপ্রিল,শনিবার,২০২৫

শরীয়তপুরে বখাটে প্রেমিকের হামলায় আহত তরুণী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রোববার (২০ মার্চ) ঢাকার একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) রাতে প্রেমিকাকে বিয়ে করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে জাহিদুল ইসলাম (২২) নামের এক তরুণ কাকলিকে কুপিয়ে আহত করেন।
নিহত কাকলি আক্তার (১৮) শরীয়তপুর শহরের চর পালং এলাকার বাসিন্দা নুরুজ্জামান মাতবরের মেয়ে। আজ রোববার কাকলির গায়েহলুদ ও কাল সোমবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এছাড়া অভিযুক্ত জাহিদুল শরীয়তপুর পৌরসভার কাশাভোগ এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, কাকলি আক্তার শহরের শরীয়তপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই সময়কার মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র জাহিদুল ইসলামের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে কাকলীকে বিয়ে করার জন্য তাঁর পরিবারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও কাকলির পরিবার তাতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে কাকলিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় তাঁর পরিবার। এতেই ক্ষুব্ধ হন প্রেমিক জাহিদুল।
এই ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে কাকলির বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন জাহিদুল। এসময় কাকলির চিৎকারে এলাকার মানুষ তাঁকে উদ্ধার করে। ঘটনার পরে পালিয়ে যাওয়ার সময় জাহিদুলকে আটক করে পিটুনি দেন লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তাঁদের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে দুজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আজ রোববার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকলির মৃত্যু হয়।
এদিকে আজ কাকলির গায়েহলুদ ও কাল সোমবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ে বাড়িতে এখন শোকের ছায়া। চর পালং এলাকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কাকলির মা ফরিদা আক্তার, ভাই ফারুক মাতবর ও মিজানুর রহমান মাতবর আহাজারি করছেন। স্বজনেরা তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এসময় কান্না জড়িত কন্ঠে ফরিদা বেগম বলেন, আজ কাকলিকে বিয়ে দিতে পারলাম না। পাষণ্ডটা আমার মেয়েটাকে এভাবে মেরে ফেলল? আমরা হত্যাকারী জাহিদুলের বিচার চাই। আমরা মেয়েটাকে নিরাপত্তা দিতে পারলাম না।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, তরুণীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছিলেন নিহতের ভাই। ওই মামলায় জাহিদুলকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। ঘটনার দিন জাহিদুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় জনতা। বর্তমানে সে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।