ইউএনওর মানিব্যাগ চুরি, পকেটমারদের দখলে ভৈরব রেলস্টেশন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:০৮ পিএম, ২ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৫
ট্রেনের ওঠার সময় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইউএনওর পকেট থেকে মানিব্যাগ চুরি হয়েছে। গত ১০ দিনেও ব্যাগটি উদ্ধার করতে পারেনি রেলওয়ে পুলিশ। ভৈরব রেলওয়ে জংশন স্টেশনে সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ইউএনওর মানিব্যাগ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনটি এখন পকেটমারদের দখলে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন ট্রেনগুলো থামলে যাত্রীরা ট্রেনে ওঠার সময় এবং ট্রেনের ভেতরে মানিব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, মোবাইলসহ স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইকারী ও পকেটমাররা নিয়ে যাচ্ছে।
অনেক সময় ট্রেন স্টেশনে বিরতি দিয়ে ছাড়ার সময় জানালা দিয়ে ছিনতাইকারীরা মোবাইল, নারীদের স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। কোনো কোনো সময় পকেটমার, ছিনতাইকারীরা দৌড়ে পালানোর সময় পুলিশ বা জনতার হাতে ধরা পড়লেও বেশিরভাগ ঘটনায় অপরাধীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর অনেকেই রেলওয়ে থানায় অভিযোগ করে না পুলিশি ঝামেলার কারণে।
জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি দুপুরে আন্তঃনগর চট্টলা ট্রেনে বিশেষ কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য রেলওয়ে স্টেশনে আসেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। ইউএনওর নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও এ সময় সঙ্গে ছিলেন। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছার পর ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ ট্রেনে ওঠার সময় তার পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় এক পকেটমার। পরে বিষয়টি জানানো হয় ভৈরব রেলওয়ে পুলিশকে। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত মানিব্যাগটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
ভৈরবের ব্যবসায়ী আবদুল জলিল। গত কয়েক দিন আগে তার মানিব্যাগটিও ট্রেনে ওঠার সময় পকেটমাররা নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। আসমা বেগম নামে এক নারী জানান, গত দুই মাস আগে আমি ঢাকা যেতে ট্রেনের সিটে বসি। ট্রেনটি ছাড়ার পর এক ছিনতাইকারী আমার গলার স্বর্ণের চেইনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সরকারি অফিসের কর্মকর্তা জুয়েল রহমান। তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে রেলস্টেশন থেকে আমার মানিব্যাগটি পকেটমাররা নিয়ে গেছে। মানিব্যাগে ৫ হাজার টাকা ও ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ছিল। পরে রেলস্টেশনের কর্তব্যরত পুলিশকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করলেও মানিব্যাগটি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ট্রেনে ওঠার মুহূর্তে পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়ে যায়। ম্যানিব্যাগে ৫৫ হাজার টাকা, ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিড কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল। ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। এ ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদাউস আহাম্মেদ বিশ্বাস বলেন, ঘটনার পর কয়েকজন অপরাধীকে আটক করেছি। কিন্তু কেউ স্বীকার করছে না। রেলস্টেশনে পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য চলছে। এ বিষয়ে তিনি জানান, যেখানে মানুষের ভিড় থাকে সেখানে পকেটমার, ছিনতাইকারীরা ওঁৎ পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই ঘটনাটি ঘটায়। যাত্রীসহ সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। থানার সীমিতসংখ্যক পুলিশ দিয়ে সব অপরাধ দমন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ইউএনওর মানিব্যাগটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।