নিরীহ সেলিমকে দেখে, বুঝা যায়নি সে সিরিয়াল কিলার: পলাশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৫ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩৭ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ছবিতে সেলিম ও কিশোর পলাশ।
ফোক গানের অন্যতম জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কিশোর পলাশের শ্রোতাপ্রিয় গান ‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’র মডেল তিনি। তিনিই আবার সিরিয়াল কিলার! বলছি সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিমের কথা। ভয়ংকর এই খুনির সঙ্গে গায়ক কিশোর পলাশের পরিচয় ও কীভাবে এই গানের সঙ্গে যুক্ত হলেন সেলিম ফকির তা জানতে যোগাযোগ করা হয় কিশোর পলাশের সঙ্গে।
‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’ খ্যাত শিল্পী চ্যানেল টুয়েন্টিফোর অনলাইনকে বলেন, আমরা গানটি শুট করার জন্য বিভিন্ন স্থান নির্বাচন করছিলাম। কারণ এটি আসলে গণ মানুষের গান এবং আমরা বিভিন্ন লোকেশনে র্যানডম মডেল নিয়েই কাজ করেছি। গানটিতে আসলে দর্শন তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বিভিন্নি শ্রেণি পেশার মানুষের দুঃখ বেদনা তুলে ধরা হয়েছে।
কিশোর পলাশ আরও বলেন, তো এক পর্যায়ে আমরা গানের দৃশ্য ধারণের জন্য নারায়ণগঞ্জের রেল স্টেশনে যাই। সেখানে যাওয়ার পর অনেকটা সাধু বা বাউল টাইপের একজন মানুষকে পাই। তিনি সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম। তখন তাকে আমরা চিনতাম না। গানের সিক্যুয়েন্সের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে সবাই মডেল হওয়ার জন্য অনুরোধ করি। তখন স্থানীয়রা তাকে (সেলিম ফকির) অনুরোধ জানালে রাজি হয়ে যান।
শুটিংয়ের সময় কি কখনো মনে হয়েছিল তিনি এতোটা ভয়ংকর মানুষ? জবাবে এই শিল্পী বলেন, তাকে দেখে বোঝাই যায়নি যে সে সিরিয়াল কিলার। কারণ নিরীহ মানুষের মতো জীবন যাপন করে। শুটিংয়ে সে আমাকে ক্রস করবে এবং আমিও তাকে ক্রস করব। শুটিং শেষে আমরা তাকে হাজার খানেক টাকা দিয়েছিলাম।
পলাশ বলেন, আমরা যদি জানতাম সে সিরিয়াল কিলার তাহলে আমরা তার সঙ্গে কাজই করতাম না। আগে জানলে তো ভয়ে থাকতাম। তবে এখন চিন্তা হচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের আবার ডাকে কিনা!
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সিরিয়াল কিলার বাউল সেলিম অষ্টম শ্রেণি পাস করে কাজ করতেন মুদির দোকানে। ২০০১ সালে চাঞ্চল্যকর বিদ্যুৎ হত্যাকাণ্ডে চারজন আসামির মধ্যে তিনি অন্যতম এবং এ হত্যাকাণ্ডে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে বিষু হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ২১ বছর বয়সে অপরাধ জগতে পা রাখেন। এরপর থেকে এলাকায় বিভিন্ন মারামারিতে অংশ নিয়ে দুর্ধর্ষ হেলাল নামে পরিচিত লাভ করেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
এসময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সেলিম ফকির নিজেকে আত্মগোপনে করতে বিভিন্ন সময় মাজার বা রেলস্টেশনে থাকতেন। সেলিম প্রায় চারটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ২০১০ সালের তার নামে একটি চুরির মামলা হলে জেলে পাঠানো হয়। এরপর ২০১১ সালে তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতনে আইনে একটি মামলা হয়। পরবর্তীতে জেল থেকে ছাড়া পেলে বিষু হত্যায় যাবজ্জীবন সাজা হলে এলাকা থেকে কৌশলে পালিয়ে যান এবং ভবঘুরে জীবনযাপন শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ৬ মাস আগে জনৈক ব্যক্তি ইউটিউবে প্রচারিত একটি গানের বাউল মডেল সম্পর্কে র্যাবের কাছে তথ্য দেয়, ওই মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বর্ণিত বিষয়ে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে র্যাব নিশ্চিত হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।