খালাতো ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে তিন ভাই-বোনের মৃত্যু!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:১০ এএম, ১৭ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৫
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বেতছড়া ঝর্ণা দেখতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়া পর্যটক ভাইবোনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে বান্দরবানে বেড়াতে গিয়েছিলেন খালাতো, মামাতো ভাইবোন ও আত্মীয়-স্বজনসহ ১০ জন। রোয়াংছড়ির তারাছার বাধরা ঝরনার পাশে সাঙ্গু নদীতে গোসলে নেমে লাশ হলেন তাদের তিনজন। নদীতে ডুবে যাওয়া খালাতো ভাইকে বাঁচাতে গিয়েই ওই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার (২২ ডিসেম্বর) ফতুল্লা থেকে তারা বান্দরবান যান। ওঠেন শহরের হোটেল দ্য প্যারাডাইসে। প্রথম দুদিন মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরেছেন। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে তাদের ফতুল্লা ফেরার কথা। সকালে হোটেলে ব্যাগ, কাপড় গুছিয়ে বের হন নৌকাভ্রমণে। শহরের ক্যাচিংঘাটা থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে চলে যান বেতছড়ার বাধরা ঝরনায়।
সেখানে ঝরনার মোহনায় নদীর স্বচ্ছ পানি দেখে সাঁতার না জানা সত্ত্বেও আট জন নেমে পড়েন। দুই জন নদীর পাড়ে ছিলেন। প্রায় ৪০ মিনিট নদীতে গোসল করে সাত জন তীরে এলেও রয়ে যান খালাতো ভাই তানিশ। উঠতে যাবেন এমন সময় তানিশ টের পান পায়ের নিচে মাটি নেই। এ সময় চিৎকার দেন। তাকে ডুবতে দেখে বাঁচাতে নেমে পড়েন সবাই। বহু কষ্টে তাকে টেনে তুললেও ডুবে যান খালাতো ভাই মো. আহনাফ আকিব, তার ছোট বোন মারিয়াম আদনীন ও তাদের খালাতো বোন মারিয়া ইসলাম। পরে মারিয়াকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নিখোঁজ থেকে যান তানিশের খালাতো ভাইবোন। শনিবার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা তাদেরও লাশ উদ্ধার করেছেন।
এ বিষয়ে তানিশ বলেন, ‘নদীর স্বচ্ছ পানি দেখে আট জন গোসল করতে নামি। প্রায় ৪০ মিনিট পানিতে গোসলের পর বুঝতে পারি, আমার পায়ের নিচে মাটি নেই। বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকি। ওই মুহূর্তে আমাকে বাঁচাতে সবাই নদীতে নামেন। পরে টেনে তোলেন। ততক্ষণে ভাইবোন নিখোঁজ হয়ে যান। হাঁটু পানি হঠাৎ এত গভীর হলো কীভাবে, বুঝতে পারিনি।’