বাবার সামনে ছেলেকে গালে জুতা মারতে বাধ্য করার অভিযোগ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:১৬ এএম, ৮ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৫

ঘটনার সময়ের ছবি সংগৃহীত
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবার সামনে যুবককে নিজের মুখে জুতা মারতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর ওই যুবকের বাবা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ৭ ডিসেম্বর রাতে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন উপজেলার যাদবপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন। তার ছেলে এস এম সরকার ওরফে হোসাইন ঢাকায় চাকরি করেন। হোসাইন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বাবার অসুস্থতার খবর পেয়ে তাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন।
ঘটনার দিন ৮ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ তার তিন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তারা এসে হোসাইনকে বাবার পাশে বসে থাকতে দেখে তার ওপর চড়াও হন। তাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখার প্রসঙ্গ তুলে ক্রুদ্ধ হন। এ সময় এস এম সরকার তাদের আক্রমণাত্মক আচরণ দেখে ক্ষমা চান। একপর্যায়ে পায়ে ধরেও ক্ষমা চান। এরপরও ছাত্রলীগ সভাপতি পায়ের জুতা খুলে এগিয়ে দিয়ে হুকুম দেন, নিজের মুখে জুতার বাড়ি মারতে। উপায় না দেখে হোসাইন নিজের মুখে জুতা দিয়ে বাড়ি মারেন।
হোসাইনের ভগ্নিপতি মোমিনুর রহমান জানান, এই ঘটনার পর তার শ্বশুর মানসিক কষ্টে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বার বার জিজ্ঞাসা করেন তার ছেলে কী অপরাধ করেছে? কিন্তু তিনি কোনও উত্তর খুঁজে পাননি। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন গিয়াস উদ্দিন। তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।
এ বিষয়ে এস এম সরকার ওরফে হোসাইন বলেন, ‘জুতা মারার দৃশ্যটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, আমার ওপর কী অত্যাচার করা হয়েছে।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে পারেননি। কেঁদে ফেলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান বিপাশ বলেন, ‘আপনারা যা শুনছেন বিষয়টি তা নয়। হোসাইন আমাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নানা কথাবার্তা লিখতো। তার বাবার অসুস্থতার কথা শুনে আমরা তাকে দেখতে যাই। সে তার ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে ক্ষমা চেয়েছে।’
জুতা মারার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে জুতা মারতে বলবো কেন। সে নিজেই আমাকে জুতা মারতে বলে। আমি না মারায় সে নিজেই এটা করেছে।’
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও শুনেছি। ঘটনা সত্যি হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’