avertisements 2

রক্তক্ষয়ী ভোটে নিহত ৭

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর, বুধবার,২০২৪

Text

রক্তক্ষয়ী সংঘাত-সহিংসতার মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৫ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট গ্রহণ শেষ হয়। সকাল ৮টায় এ ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত সাতজন। আহত হয়েছেন প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থক, পুলিশ, সাংবাদিকসহ কয়েকশ ব্যক্তি। সেইসঙ্গে কেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মারা, ব্যালট ছিনতাই, সিলের কালি সংকটসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে কিছুদিন ধরে সংঘাত বেড়েই চলছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছিল। তারপরও সংঘাত আর প্রাণহানি ঠেকানো যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ভোট চলাকালে ব্যাপক অনিয়মের খবর জানিয়ে প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সহায়তা চাইলেও তারা সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে বলে দাবি করেন; মেলেনি কোনো সহায়তা।

কেন্দ্র দখলসহ নানা অনিয়মের কারণে বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। তবে সার্বিক তথ্য এলে এমন কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নরসিংদীতে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের তিন কর্মী নিহত হন। রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বটতলীকান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই গোটা নির্বাচনী এলাকায় দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ম্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বুধবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আশরাফুল হক সরকারের সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হাসান জাকিরের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ককটেল বিস্ম্ফোরণ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনায় তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- বালুয়াকান্দী গ্রামের আবদুল হেকিম মিয়ার ছেলে সালাহ উদ্দিন মিয়া (৩০), সোবহানপুর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর হক (২৭) ও বটতলীকান্দী গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৩৭)। সালাহ উদ্দিন মিয়া ও জাহাঙ্গীর হক বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক। দুলাল মিয়া আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক। সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

দুপুর ১২টার দিকে ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলো ভোটারশূন্য। ৯৩ নম্বর বাঁশগাড়ি (২) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গেলে প্রিসাইডিং অফিসার শাহিন মিয়া জানান, এরই মধ্যে ৪০ শতাংশ ভোট হয়েছে। তবে এ সময় স্কুুলের আঙিনায় কোনো ভোটার দেখা যায়নি। পার্শ্ববর্তী মির্জাচর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিদ্রোহী প্রার্থী জাফর ইকবাল মানিক ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নলবাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বালুয়াকান্দী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষে সাইফুল, ফালু ও আল আমিন গুরুতর আহত হন। বালুয়াকান্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হামলাকারীরা ভেঙে দিয়েছে।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুরে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক শাওন আহমেদসহ ১৫ জন আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শাওনকে মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এতে প্রায় এক ঘণ্টা এ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। চিকিৎসক সালাহ উদ্দিন মোল্লা বলেছেন, মাথায় গুলি কিংবা কোনো কিছুর আঘাতে রক্তক্ষরণে শাওনের মৃত্যু হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী হারুন অর রশীদ এ জন্য নৌকার প্রার্থী জাকির হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করেছেন। তবে নৌকার প্রার্থী দাবি করেন, বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজনই কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে।
একই উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের খিরারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন আহত হন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত সানাউল্লাহ ডালিকে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে। কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আফজাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, দুটি মরদেহ পুলিশ হোফাজতে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ছাড়া ভোট চলাকালে মেঘনার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের রামপ্রসাদের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের কালাচাঁনকান্দি দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ভোট গ্রহণের মধ্যে দুই সদস্য প্রার্থী মুরাদ ও জামাল পাশার সমর্থকদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। উপজেলার লেলাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানায়। নিহত মো. শফি (৫৫) তার সমর্থক বলে মুরাদ দাবি করেছেন। মুরাদ ওই এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ ও সাংবাদিকরা জানান, গোপালঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বাজারে সংঘর্ষ হয়। এতে ছুরিকাঘাতে মারা যান শফি।

বিশৃঙ্খলা এবং সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে কক্সবাজারের তিনটি উপজেলার ২১ ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ। জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সদরের খুরুশকুলে তেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী শেখ কামাল ও আবু ছিদ্দিকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আকতারুজ্জামান পুতু (৩০) নামে একজন নিহত হন। এ ছাড়া দুই পুলিশসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। এ কারণে কেন্দ্রে ভোটার যায়নি। তাই ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে। সদরের চৌফলদণ্ডীর ইউপির ৩, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রে বিচ্ছিন্নভাবে হট্টগোল হয়েছে। এতে এক নারী সদস্যের এজেন্ট এবং পুলিশের এক এসআই আহত হয়েছেন।

উখিয়ার হলদিয়াপালংয়ে দুটি কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম ও বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরুল কায়েস চৌধুরীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। এতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নলবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটির ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে। উখিয়ার জালিয়াপালংয়ে এক?টি কেন্দ্রে নৌকার পক্ষে সিল মারার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, সহিংসতার ঘটনায় ২০ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের দক্ষিণ আটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৫-১৬ যুবক প্রবেশ করে বেশকিছু ব্যালট পেপার ছিনতাই করে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট রুকসানা আক্তার শিখা ও বিদ্রোহী প্রার্থী ফয়েজ আহমেদ খেলুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষে ৩০-৩৫টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি টিয়ার গ্যাসের শেল ও বুলেট নিক্ষেপ করে।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছিল। তখন ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী জিয়াসমিন বেগমের দেবর ও তার সমর্থকরা প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে নৌকা ও বই মার্কায় সিল দিচ্ছিল। এ সময় ডিবিসির সাংবাদিক বিএম ইশ্রাফিল এই জাল ভোট দেওয়ার ভিডিও ধারণ করছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জালিয়াতরা তার ওপর হামলা করে। সঙ্গে থাকা অন্য সাংবাদিকদেরও ধাক্কা মেরে মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ও রাজগঞ্জে ভোট চলাকালে সংঘর্ষে দুই প্রার্থীর ১০ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আটজন পুলিশের গুলিতে এবং দু'জন সরকারদলীয় চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সেলিমের অনুসারীদের গুলিতে আহত হন। আলাইয়াপুরের সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও রাজগঞ্জের শ্রীধারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটে। আটক করা হয়েছে দু'জনকে। সুলতানপুর বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন ও বিদ্রোহী প্রার্থী আনিছুর রহমানের কর্মী-সমর্থকরা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এ সময় তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ আটজন গুলিবিদ্ধ হন। রাজগঞ্জের রুবেল বলেন, তিনি ও তার বন্ধু নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ জিকরার ভোট করেন। তারা শ্রীধারপুর কেন্দ্রে অবস্থান করার সময় নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের লোকজন গুলি করে। এতে রুবেল ও সাইফুল আহত হন। জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় এক যুবককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। একটি কেন্দ্রের ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভোট স্থগিত করা হয়। অন্য একটি কেন্দ্রে ব্যালেটে জাল সিল মারার ঘটনায় ৩০০ ব্যালট বাতিল করেন ম্যাজিস্ট্রেট। এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সাতজনসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বানিয়াজান কেন্দ্রে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে, একই ইউনিয়নের দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ও রৌহা ইউনিয়নে দুই কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। নড়াইলের ১৩ ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে সহিংসতা ও প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। সদরের আউড়িয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আকরাম হোসেনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শেরপুরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রে সদস্য, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। পাঁচটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। সহিংসতায় সাতক্ষীরার বৈকারী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীসহ আটজন আহত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের জাঙ্গাল এলাকায় ভোটের আগের রাতে পুলিশের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ দাবি করেছে, একদল সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছিল। জাল ভোট ও কেন্দ্র থেকে প্রতিপক্ষের এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও কারচুপির মধ্য দিয়ে পাবনার সুজানগরের ১০ ইউনিয়নে ভোট শেষ হয়েছে। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মারার ঘটনায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় পাঁচজন আহত ও পাঁচজন আটক হয়েছে। ভোলার দৌলতখানে ভোট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়। আচরণবিধি ভাঙার দায়ে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীকে জরিমানা করা হয়। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টায় সদস্য প্রার্থীসহ ছয়জন আটক হয়েছে। পুলিশসহ আহত হয়েছে তিনজন।

রাজশাহীর তানোরের সরনজাই ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। রংপুরে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে দু'জনকে আটক করা হয়। খুলনায় কেন্দ্র দখলকালে পাঁচজন আটক হয়েছে। আহত হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। গাইবান্ধা, ঢাকার ধামরাই ও মেহেরপুরে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোট হয়েছে। পটুয়াখালীতে এক স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দু'জনের কারাদণ্ড ও একজন আটক হয়েছে। মৌলভীবাজারের জুড়ীতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে জিম্মি করে নৌকায় সিল মারার অভিযোগ উঠেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কেন্দ্রে স্ট্যাম্পের কালি সংকটে দিনভর উত্তেজনা দেখা দেয়। দুটি সিলের পর তৃতীয় সিল মারার কালি নেই- এমন অভিযোগ ওঠে নেত্রকোনার কয়েকটি কেন্দ্রে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2