বিয়ের দিন পুকুরে ভাসছে প্রবাসীর লাশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৩২ এএম, ৫ অক্টোবর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৩৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
আবদুল কাদের (৩২)। ৪ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। করোনার কারণে প্রায় ২৫ দিন আগে সৌদি আরব থেকে বাড়িতে চলে আসেন। আজ শুক্রবার দুপুরে পারিবারিকভাবে তার বিয়ের জন্য সকল আয়োজনও সম্পন্ন হয়। বাড়িতে আনন্দ উৎসব চলছে এবং মেহমানও আসতে শুরু করেছেন।
ভোরের দিকে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে ঘরে এসে ফের রাস্তায় হাঁটতে যান কাদের। কিন্তু হাঁটতে গিয়ে নিখোঁজের তিন ঘণ্টা পর সুপারি বাগানের ভেতর পরিত্যাক্ত পুকুরে মিললো তার ভাসমান লাশ।
ঘটনাটি ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউপির খলিফা মসজিদের সংলগ্ন জগার বাড়ির পুকুরে। নিহত আবদুল কাদের একই এলাকার জয়নাল আবেদিনের ছেলে। স্বজনদের আহাজারিতে ও প্রতিবেশীদের কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
দুপুরে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত যুবকের বাবা জয়নাল আবেদিন বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন।
নিহতের মা আছিয়া বেগম ও বাবা জয়নাল জানান, কাদের সৌদি আরব থেকে বাড়িতে আসে এবং বেকার সময় কাটাচ্ছিলো। এতে সে হতাশাগ্রস্ত ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার ছোট ভাইও সৌদি আরব রয়েছেন। সে দিনের বেলায় ভালো থাকলেও রাতে অস্থির থাকে ও ঘর থেকে বের হয়ে যায়। তাকে চিকিৎসা করাতে গেলে ডাক্তার ঘুমের ওষুধ দেন। কিন্তু রাতেও ঘুম হতো না।
অবশেষে তার ইচ্ছাতেই পারিবারিকভাবে চরমোহনা ইউপির চালতাতুলি এলাকার মোখলেস ও রোকেয়া বেগমের মেয়ে সুমি আক্তারের সাথে বিয়ের দিন ঠিক করা হয়। মেহমানও বাড়িতে আসতে শুরু করেছে। বিয়ের জন্য সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে ঘরে আসে কাদের। দুই ঘণ্টা পর কাদের ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য চেষ্টা করলে তার বাবা বাধা দেন। কাদের বাধা উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরে তিন ঘণ্টা পর জগার বাড়ির সুপারি বাগানের ভেতর পরিত্যাক্ত পুকুরে কাদেরের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। মুত্যুটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।