ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ‘সোহাগ বাবুর্চি’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ অক্টোবর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১১:২২ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
মোহাম্ম’দ সোহাগ। পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতোমধ্যে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে শেষ করেছেন স্নাতক। বর্তমানে স্নাতকোত্তর চলমান। তবুও বাবার বাবুর্চি পেশা ধরে রাখতে লজ্জা নেই এই যুবকের। বেশ স্বাচ্ছন্দে বনভোজন কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানের রান্না করেন তিনি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি আলোচনায় আসে।
মোহাম্ম’দ সোহাগ নরসিংদীর শি’বপুর উপজে’লার যোশর ইউনিয়নের ভাংগারটেক গ্রামের ওসমান গনির সন্তান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ সেশনের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী।
জানা যায়, সোহাগের জন্ম নরসিংদীর শি’বপুরে। গ্রামের স্কুল থেকে সম্পন্ন করেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ’মাধ্যমিক পাস করে ২০১৫ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।এদিকে তার বাবা পঁচিশ বছর ধরেই শি’বপুর ও আশেপাশের এলাকায় বিয়ে বাড়িসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাবুর্চির কাজ করে আসছেন। ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন থেকেই বাবার রান্নার কাজে সহায়তা করতেন তিনি। ধীরে ধীরে আয়ত্ত করেছেন কোন খাবারে কখন, কী’ভাবে, কেমন মসলা দিতে হয়।
একপর্যায়ে ২০১৪ সালে দিকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন নিজেই ২০-২৫ জন খাবার খাবে এমন এক অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম একা রান্নার কাজ নেন। সেখানে ভালো করলে এক এক করে বড় বড় অনুষ্ঠানে রান্না করতে শুরু করেন সোহাগ । বর্তমানে তিনি পাঁচশ মানুষের রান্না একা এবং একবারেই করতে পারেন।
মোহাম্ম’দ সোহাগ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিরিয়ানি, ভুনাখিচু’রি, গরুর মাংস, খাসির মাংস, রোস্ট, স্পেশাল রুই মাছ (ক্রিস্পির মতো), মুগ ও মশুরের ডালসহ প্রায় দশ প্রকারের রান্নার আইটেম জানা আছে আমা’র। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে যেসব খাবার আছে সবই পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা বাবুর্চি, আমি ঢাবিতে পড়েও বাবুর্চির কাজ করি এতে লজ্জার কিছু নেই। এটা গর্বের বিষয়। আমি অবশ্যই বিভিন্ন চাকরির জন্য চেষ্টা করব। অন্যদিকে আমা’র রান্না করা এসব বিষয় নিয়েও পরিকল্পনা আছে। হতে পারে কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা এই ধরনের কিছু একটা।’
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না করতে সম্মানী কেমন নেন? তিনি বলেন, ‘এটার একটা রেট থাকে। মা’থাপিছু ২০ টাকা শুধু বাবুর্চির খরচ। গ্রামাঞ্চলে অনেকের টাকার সমস্যা থাকে। সেক্ষেত্রে আরও অনেক কম কিংবা প্রয়োজনে বিনামূল্যেও করে দেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংদী জে’লা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সম্পাদক সারোয়ার হোসাইন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে সোহাগকে চিনি, সে খুব ভালো রান্না করে। ক্যাম্পাসে তার রান্নার সুনাম আছে। তাছাড়া কোনো কাজে লজ্জা করতে নেই। সোহাগ নিজের পছন্দের কাজটা করছে।