‘লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল আমার সোনার মানিক’
‘লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল আমার সোনার মানিক’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:১৩ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সমুদ্র দেখতে যাওয়াই আমার সোনার মানিকের জীবনের কাল হলো। লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল আমার সোনার মানিক। সে আর কখনই মা বলে ডেকে জড়িয়ে ধরবে না।’
এভাবেই বিলাপ করছিলেন রাফিদ ঐশিকের মা ফিরোজা বেগম। রোববার বিকালে বাড়িতে ছেলের লাশ পৌঁছলে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
আহাজারি করতে করতে ফিরোজা বেগম আরও বলছিলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর ছবি পাঠিয়েছে। তারে বলেছি এখন আবহাওয়া ভালো না। বেশি সমুদ্রে থাকবি না! ঠাণ্ডা লাগবে...।’
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে যশোরের দুই শিক্ষার্থীর। তারা হলেন- যশোর উপশহরের এ ব্লকের বাসিন্দা কবি কাসেদুজ্জামান সেলিমের ছেলে রাফিদ ঐশিক ও শহরের লালদীঘি এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক শাহরিয়ার মেহের ইবনে মিজানের ছেলে মেহের ফারাবি অভ্র।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৬ বন্ধু একসঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে যান। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাফিদ ঐশিক ও শনিবার মেহের ফারাবি অভ্রর লাশ সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে।
রোববার তাদের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। শত শত মানুষের চোখের জলে চিরবিদায় জানানো হয়েছে। পৃথক জানাজা শেষে তাদের দাফন করা হয়েছে। দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
রাফিদ ঐশিকের বাবা যশোরের পরিচিত মুখ কবি কাসেদুজ্জামান সেলিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, তুই আমাদের ছেড়ে চলে গেলি বাপজান। ফিরে আয় বাপ! বড় আদরের ছেলে তুই। আমার ৪ ভাই-ই তোরে তাদের আপন ছেলে মতো দেখে। ওরে খুব ভালোবাসতো। আহা ছেলেটা চলে গেল। সবাই দোয়া করবেন ছেলেটার জন্য।
এদিকে রোববার দুপুরে যশোর শহরের লালদীঘির পূর্বপাড়ের বাড়িতে এসে পৌঁছায় মেহের ফারাবি অভ্রর লাশ। এ সময় পরিবারের সদস্যরা বুকফাটা আর্তনাদে ফেটে পড়েন। সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
অভ্রর মামা মাহমুদুল ইসলাম বলেন, কারও বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। এটা আমরা স্বাভাবিক মৃত্যু মেনেই নিয়েছি। আমার ভাগ্নের জন্য দোয়া করবেন সবাই।