avertisements 2

মৃত্যু যন্ত্রণাও নিয়েও মা সন্তানের খোঁজে ব্যস্ত!

মৃত্যু যন্ত্রণাও নিয়েও মা সন্তানের খোঁজে ব্যস্ত!

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৩১ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৫২ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪

Text

রংপুর মর্ডান মোড়ের বাসিন্দা শাম্মি বেগম (৩৫)। সাত বছরের ছেলে শুভকে নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাবার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জে যাচ্ছিলেন।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী প্রশিকা অফিসের সামনে ঢাকা থেকে রংপুরগামী একটি কাভার্ডভ্যান অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কে ছিটকে পড়েন মা-ছেলে ও অটোরিকশা চালকসহ আরো তিনজন।

রক্তাক্ত শরীর নিয়ে সড়কের পাশে পড়ে থাকা শাম্মিকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান স্থানীয় গৃধারীপুর গ্রামের ফুলমিয়া ও মেহেদী হাসান গালিব। এসময় শাম্মি নিজের কথা ভুলে বারবার ছেলে শুভর খোঁজ করছিলেন। মা-ছেলেকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে শুভ শঙ্কামুক্ত হলেও মা শাম্মির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।  

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শাম্মী যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন, সেসময়ও তিনি বলছিলেন, শুভ কোথায়- শুভর কি অবস্থা? তখন উদ্ধারকারী ফুল মিয়া ও গালিব শুভকে মায়ের কাছে নেয়। শুভ মাকে বলে মা এইতো আমি, আমি ঠিক আছি। আমার কিছু হয়নি। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পরেই শুভর সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন শাম্মি। সন্তানের প্রতি মায়ের এ ভালোবাসা এবং সাত বছরের শিশুর সামনে মায়ের মৃত্যু নির্বাক করে দিয়েছে উপস্থিত সবাইকে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে মার কিছু হয়নি-ঘুমিয়ে পরেছেন, তার চিকিৎসা চলছে। এসব বলে শুভকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন ওই দুই যুবক।

পরে শুভর বাবা, বোন, নানা এসে রাতেই শাম্মির মরদেহ বাবার বাড়ি শিবগঞ্জে নিয়ে যান। শুভর বাবার নাম বাবু মিয়া। শম্পা নামে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক বোন আছে শুভর।

ওই দুর্ঘটনায় শাম্মি ছাড়াও আরো তিনজন প্রাণ হারান। তারা হলেন- সিএনজি চালক গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের সবুজ মিয়া (৩৫), ভোলা জেলার নিয়ামুল হকের ছেলে জিন্টু মিয়া (৩০) ও রংপুরের হারাগাছ বাংলা বাজারের শাহ জালাল (৩৫)।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা পলাশবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথে সদরের উত্তরবাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন প্রশিকা অফিসের সামনে রংপুরগামী পণ্যবাহী একটি কাভার্ডভ্যান অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে চালকসহ চারজন নিহত হন।  

গাইবান্ধা সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয় এবং পরে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2