কর্মচারী দম্পতির মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা!
কর্মচারী দম্পতির মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৮ জুলাই,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫২ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে চার লাখ টাকা উত্তোলনের অপচেষ্টার দায়ে পৌরসভায় কর্মরত এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাতে নলছিটি পৌরসভা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ রেখা বেগম ও তাঁর স্বামী পৌরসভার ইলেকট্রিশিয়ান সিরাজুল ইসলাম। এ সময় রেখা বেগমের ভাই মো. কামাল হোসেন টাকা নিয়ে পৌরসভায় এসে পুলিশকে ঘুষ দিতে চাইলে এক লাখ ২২ হাজার টাকাসহ তাকেও আটক করা হয়।
এ ঘটনায় পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহেদ খান বাদী হয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে রাতেই নলছিটি থানায় মামলা করেন। পরে সেই মামলায় কর্মচারী দম্পতিকে গেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশ ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, মেয়র আবদুল ওয়াহেদ খানের স্বাক্ষর জাল করে মেসার্স সুগন্ধা এন্টারপ্রাইজের নামে চার লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে ইলেকট্রশিয়ান সিরাজুল ইসলাম ২৬ জুলাই সোনালী ব্যাংকের নলছিটি শাখায় উপস্থাপন করেন। স্বাক্ষর সঠিক নয়, এমন সন্দেহে চেকটি ফেরত দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ রেখা বেগম আরেকটি চেক লিখে টাকা উত্তোলনের অপচেষ্টা চালান। এ সময় নলছিটি সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক পৌর মেয়রের কাছে মুঠোফোন বিষয়টি জানতে চান। মেয়র আদৌ চেক সম্পর্কে অবগত নন বলে জানিয়ে তিনি কৌশলে পৌরসভার কোষাধ্যক্ষ রেখা বেগম ও তাঁর স্বামী ইলেকট্রিশিয়ান সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে জালিয়াতির চেক ও চেক বই উদ্ধার করেন। পরে তাদের পৌরসভার একটি কক্ষে আটক রেখে পুলিশে খবর দেন মেয়র।
এদিকে পুলিশকে ঘুষ দিয়ে পার পাওয়ার আশায় কোষাধ্যক্ষ রেখা বেগম তার ভাই মো. কামাল হোসেনকে টাকা নিয়ে পৌরসভায় আসতে বলেন। কামাল এক লাখ ২২ হাজার টাকা নিয়ে পৌরসভায় এসে পুলিশকে ঘুষ দিতে চাইলে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকেও আটক করে পুলিশ। এ সময় ওই এক লাখ ২২ হাজার টাকাও জব্দ করা হয়। আটক তিনজনকে রাতেই পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। তবে পরে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান কামাল।
এদিকে, চেকটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সচিবের স্বাক্ষর লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করেছেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যাংকে সংরক্ষিত সচিবের যে নমুনা স্বাক্ষরটি রয়েছে, সেই স্বাক্ষরের সঙ্গে এই চেকের স্বাক্ষরের সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ধারণা, টাকা আত্মসাতের চেষ্টার সঙ্গে সচিবও জড়িত। তবে মামলায় কেন সচিবকে আসামি করা হয়নি, এই নিয়ে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
পৌরসভার সচিব এ এইচ এম রাশেদ ইকবাল বলেন, ‘আমি কোনো চেকে সই করিনি। এটাও জাল করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র আবদুল ওয়াহেদ খান বলেন, ‘পৌরসভায় কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। যে-ই অপরাধ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাকেই আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
নলছিটি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার সকালে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’