এসপির নামে চাঁদাবাজি ফেঁসে গেলেন দুই ডিবি কর্মকর্তা
এসপির নামে চাঁদাবাজি ফেঁসে গেলেন দুই ডিবি কর্মকর্তা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২৬ জুলাই,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:২৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞার নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন ডিবি পুলিশের দুই কর্মকর্তা। তাদেরকে ইতিমধ্যেই বগুড়া থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। বদলিকৃত দুইজনের মধ্যে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সাইবার ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন এবং একই ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত আলম।
রবিবার (২৫ জুলাই) বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা এ তথ্য জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার জানান, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় শনিবার রাতে এসআই শওকত আলমকে সাময়িক বরখাস্ত এবং পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিনকে রাজশাহী রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়। রবিবার তাদের দুইজনকেই রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআর এফ) রাজশাহীতে বদলি করা হয়।
অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ মে বগুড়া সদরের শিকারপুর গ্রামে মাস্টার বিড়ি ফ্যাক্টরিতে যান এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ফ্যাক্টরির গোডাউনে বিপুল পরিমাণ জাল ব্যান্ডরোল মজুদ আছে মর্মে মাস্টার বিড়ির স্বত্বাধিকারী হেলালকে ডেকে আনেন। গোডাউন খোলার পর বিপুল পরিমাণ ব্যান্ডরোল পাওয়া গেলেও হেলাল দাবি করেন সেগুলো বৈধ। কিন্তু ডিবি পুলিশের কথা ব্যান্ডরোলসহ হেলালকে ডিবি অফিসে যেতে হবে। একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের দুই কর্মকর্তা হেলালের সাথে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে জানানো হয় এসপি সাহেবের তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান হয়েছে।
এসপি সাহেবকে ম্যানেজ না করতে পারলে ব্যান্ডরোলসহ হেলালের নামে মামলা দিতে হবে। এসপি সাহেবসহ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২ কোটি টাকা দাবি করা হয়। একপর্যায়ে ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় হেলাল। যার ১০ লাখ টাকা ওই দিন দিতে হবে এবং বাকি ১৫ লাখ টাকা এক সপ্তাহ পরে দিবে। হেলাল ৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ওই রাতেই তাদের হাতে দেন। অবশিষ্ট ১৬ লাখ টাকা না দিয়ে হেলাল তালবাহানা করে জুন মাস পার করেন। জুলাই মাসের ১১ তারিখে বগুড়ার এসপি আলী আশরাফ ভুঞা'র বদলির আদেশ হয়। এসপি সাহেব চলে যাচ্ছেন তাকে টাকা দিতে হবে মর্মে হেলালকে চাপ দিতে থাকেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
ফলে হেলাল তার এক পরিচিত জনের মাধ্যমে ১৩ জুলাই বিষয়টি এসপিকে জানায়। এসপি সাহেব তাৎক্ষণিক হেলালকে অফিসে ডেকে আনেন। বিস্তারিত শুনেন এবং হেলালের কাছ থেকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেন। অভিযোগের পর ১৪ জুলাই সন্ধ্যার পর হেলালকে ৯ লাখ টাকা ফেরত দেন তারা।
পরদিন অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাশন) আলী হায়দার চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন পুলিশ সুপার। এঘটনার পর পুলিশ পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন বগুড়া জেলা থেকে বদলির আবেদন করেন এবং এসআই শওকতকে পুলিশ সুপার শিবগঞ্জ থানায় বদলি করেন।