avertisements 2

ওবায়দুল কাদের বলেন ‘তুই আমার পদ খাইবি’: কাদের মির্জা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:৫০ পিএম, ২৮ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৩৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪

Text

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ায় বড় ভাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ওপর চটেছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, পদ টিকাতে ওবায়দুল কাদের অপশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।

তিনি ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের বরাত দিতে বলেন, ওবায়দুল কাদের আমাকে বলেন– তুই আমার পদ খাবি নাকি?

কাদের মির্জা বুধবার সন্ধ্যায় বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে কোম্পানীগঞ্জ নাগরিক সমাজ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বক্তব্য দেননি।

এ কারণে তার প্রতি তীব্র ক্ষোভ ঝেড়ে ছোটভাই নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘ভার্চুয়াল প্রোগ্রাম দিয়ে যারা আসেননি, তারা অপরাজনীতির কাছে মাথা নত করেছেন। অপরাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণকে ঘৃণা করি।’

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, অপরাজনীতির কাছে মাথানতকারীরা আমার ভোটারদের অভিনন্দন পর্যন্ত জানাননি। যে দলের (আওয়ামী লীগ) জন্য সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করেছি, তারাও খবর নেননি।

তিনি সংসদ সদস্য একরাম চৌধুরীর সমালোচনা করে বলেন, আমরা একরাম চৌধুরীর মতো নয় যে, নিজের সন্তানের হাতে অস্ত্র তুলে দেব। যেদিন আমার সন্তান অস্ত্র হাতে নেবে, সেদিন যেন আমার মৃত্যু হয়। তিনি একরাম চৌধুরীর ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমার বাবা আমার ছোট, তুমি আমার ছেলের মতো। তোমার বাবার মুখের কথা– তুমি বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষিত, চেহারাও ভালো, তুমি তোমার অস্ত্র ফেলে দিয়ে শান্তির রাজনীতিতে এসো। কথা দিলাম আমরা তোমাকে সহযোগিতা করব।

তিনি একরাম চৌধুরীর স্ত্রী কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিউলী একরামের সমালোচনা করে বলেন, পরপুরুষের সঙ্গে যে নারী মদের আড্ডায় বসে, সেই ছবি আবার ফেসবুকে ভাইরাল হয়, সে কখনও ভালো হতে পারে না। একরাম চৌধুরী টেলিভিশন লাইভে বলেছে– আমি নাকি অসুস্থ, আমার নাকি চিকিৎসার প্রয়োজন। আমি বলব– আমার নয়, তার (একরাম চৌধুরী) চিকিৎসার প্রয়োজন।

আবদুল কাদের মির্জা সেতুমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাননীয় মন্ত্রী বলেছিলেন– ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন। আমার ছেলেমেয়েদের সেই চাকরি কই? তিনি বলেন, অন্তত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫০০ ও কবিরহাট উপজেলায় ৫০০ ছেলেমেয়ের চাকরি যদি না হয়, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলব। গ্যাস দেবেন বলেছেন, কোন ষড়যন্ত্রে গ্যাস আসেনি তা জানি।

একরাম চৌধুরী আমার গ্যাসফিল্ডের নামটা পর্যন্ত নিয়ে গেছে। গ্যাস পাওয়া গেছে কোম্পানীগঞ্জের শাহজাদপুরে; আর নাম দেওয়া হয়েছে কবিরহাটের সুন্দলপুরে। এসব বললে তিনি (ওবায়দুল কাদের) নাকি অসুস্থ, অসুস্থ হলে অপশক্তির কাছে মাথানত করেন কীভাবে? মন্ত্রীর (ওবায়দুল কাদের) কাছে লোকজন কোনো অভিযোগ নিয়ে যেতে পারে না উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, একরাম চৌধুরীর চামচারা সবসময় মন্ত্রীকে ঘিরে রাখে।

কাদের মির্জা আরও বলেন, বহিষ্কারের হুমকি দিচ্ছেন? বহিষ্কার করবেন, বহিষ্কার করলেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জয়গান ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা বলব। গ্রেফতার করবেন? ১৯৮২ সাল থেকে জেল খেটে আসছি। এখন যারা ষড়যন্ত্র করেন, তখন তো তারা মায়ের পেটে ছিলেন।

আবদুল কাদের মির্জা প্রশ্ন রেখে বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি কীভাবে স্যারেন্ডার করলেন, কীভাবে আত্মসমর্থন করলেন? আমার আব্বা কি রাজাকার ছিল? ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার আব্বা মোশারফ হোসেন রাজাকার নয়, তিনি বসুরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আর যারা আমার পরিবারকে নিয়ে রাজাকার বলছেন, তাদের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাবউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী ফরিদা ইয়াছমিন মুক্তা এবং নাজমা বেগম শিপার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, সহসভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল, বামনী কলেজের অধ্যক্ষ রাহবার হোসেন, মেয়রের সহধর্মিণী আক্তার জাহান বকুল, বিশিষ্ট কলামিস্ট রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, আমেরিকা প্রবাসী রমেশ চন্দ্র সেন, সেলিম চৌধুরী ভিপি বাবুল, বিশিষ্ট শিল্পপতি গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল, বসুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভীন, সাবেক ছাত্রনেতা জহিরুল ইসলাম তানভীর, নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাশিক মির্জা কাদের প্রমুখ।

উৎসঃ   যুগান্তর

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2