চাচাতো বোনকে গোপনে বিয়ে করাই কি মৃত্যু ডেকে আনল সৌরভের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৪ জুন,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:২৬ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ছবি: সংগৃহীত
পাঁচ বছর ধরে চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেম, এক মাস আগে গোপনে বিয়ে করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভ (২৪)। তিনি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের ইউসুফ আলী আকন্দের ছেলে। ঈশ্বরগঞ্জে বাড়ি হলেও ঢাকার মতিঝিলে সপরিবারে থাকতেন। গুলশানের প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ছোট চাচা ইলিয়াস আলীর মেয়ে ইসরাত জাহান ইভার সঙ্গে পাঁচ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সৌরভের। বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন ছিল। গত ১২ মে সৌরভ ও ইভা গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি ইভার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ইলিয়াস আলী মেনে নিতে পারেনি। গত ১৬ মে কৌশলে ইভাকে কানাডায় পাঠিয়ে দেন। এতে সৌরভ হতাশ হয়ে পড়েন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াস আলী তাঁর চাচাতো ভাই ইউসুফ আলী আকন্দকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। গত সপ্তাহে ইউসূফ আলী আকন্দ গ্রামের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামে এসে চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে এ নিয়ে পরামর্শ করে সমাধানের আলোচনা করেন।
গত শনিবার ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আসেন সৌরভ। রোববারে আবার ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার রাত থেকেই তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন অনেক যোগাযোগ করেও তাঁর সন্ধান পায়নি।
‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, সেই আমার সন্তানকে হত্যা করল?’‘যে ভাইকে বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি, সেই আমার সন্তানকে হত্যা করল?’
এদিকে গতকাল রবিবার সকালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কের সুতিয়া নদীর সেতুর নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া লাগেজের ভেতরে চার টুকরো খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রথমে পরিচয় শনাক্ত না হলেও পরে সৌরভের বড় বোন ব্যাংকার আফরোজা মরদেহ দেখে শনাক্ত করেন।
সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী আকন্দ বলেন, ‘আমার ছোট ভাইয়ের মেয়ে ইভার সঙ্গে প্রেম ছিল। তাঁরা দুজন পরিবারের অজান্তে বিয়েও করেছিল। আমরা তা মেনে নিইনি। কিন্তু ডেকে নিয়ে এভাবে হত্যা করবে, তা কল্পনা করতে পারিনি। আমি এর কঠিন বিচার চাই। কেন আদরের সন্তানকে টুকরো টুকরো করল?’
সৌরভের মা মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আপন চাচাই তাকে খুন করেছে। আমি এর বিচার চাই, ফাঁসি চাই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলছে।