avertisements 2

গরিব মানুষকে অর্ধেক দামে চাল দিবে বলে  টাকা নিয়ে উধাও

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৩ | আপডেট: ০১:০৪ এএম, ১১ মার্চ,সোমবার,২০২৪

Text

ছবি সংগৃহীত

সাংবাদিক ও কমিউনিটি পুলিশ পরিচয়ে দানশীল সেজে গরিবদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে মামুন মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জ ভৈরবের কালিপুর গ্রামে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে যে বাসায় মামুন থাকতেন সেখানে গিয়ে দরজায় তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রতন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হলে তিনি জানান, মামুন এক হাজার ২০০ টাকায় চালের বস্তা দেবেন বলে তার কাছে থেকে ছয়টি কার্ডের সাত হাজার ২০০ টাকা নেন। শুনেছি তিনি চাল আনতে গেছেন। কেউ কেউ বলাবলি করছে পালিয়ে গেছেন তিনি।

বাসার মালিক যুবলীগ নেতা নীল মিয়া বলেন, ‘এক বছর আগে মামুন আমার কাছ থেকে জমি কেনেন। দুইতলা ভবন নির্মাণের কাজ চলার সময় সেই জায়গা আমার কাছে বিক্রি করে দেন। পরে তিনি আমার বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকছেন। প্রায় দুই বছর ধরে ভৈরবে তার আসা যাওয়া। সাত মাস আগে উপজেলার চাঁনপুর গ্রামে বিয়ে করেন মামুন। এলাকায় তিনি নিজেকে কখনো সাংবাদিক, কখনো কমিউনিটি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিতেন। শুক্রবার সকালে কাজের মেয়ের কাছে চাবি দিয়ে চাল আনতে যাচ্ছেন বলে বের হন মামুন। এরপর আর ফেরেননি। তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগও করা যাচ্ছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালিপুর গ্রামে গরীব অসহায় দুস্থদের অর্ধেক দামে চাল-ডাল দেওয়ার নামে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয় মামুন। এক হাজার ২০০ টাকায় এক বস্তা (৫০ কেজি) করে চাল এবং ৬৫০ টাকায় পাঁচ লিটার তেল, দুই কেজি ডাল, দুই কেজি আলু, দুই কেজি চিনি দেওয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

পলতাকান্দা এলাকার আচার বিক্রেতা নুরু মিয়া বলেন, ‘মানুষের কাছে শুনে অর্ধেক দামে চাল-ডাল নিতে গত ২৫ জানুয়ারি দুই বস্তা চালের জন্য দুই হাজার ৪০০ টাকা দেই। এখন শুনছি তিনি নাকি পালিয়েছেন। আমাদের কী হবে, কার কাছে বিচার চাইবো?’

শুটকি বিক্রেতা মুক্তা রাণী দাস বলেন, ‘রাস্তায় বসে শুটকি বিক্রি করি। কম দামের চালের বস্তা পাবার আশায় কিস্তিতে টাকা তুলে এক বস্তা চালের টাকা দিয়েছিলাম। এখন আমি চাল পাব কোথায়, কিস্তি দেবো কীভাবে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ইব্রাহীম মিয়া বলেন, ‘মামুন ভৈরবের স্থায়ী বাসিন্দা নন। বছর দুয়েক এই এলাকায় বাস করছেন। তার চাল বিতরণের বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে আমি প্রতিবাদ করি। এলাকার কিছু মানুষ চাল পেয়ে আমার সঙ্গে বিরোধিতা করে। আমি বিষয়টি পৌর মেয়র ও ভৈরব থানা পুলিশকে অবগত করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তখন।’

পৌর মেয়র আলহাজ মো. ইফতেখার হোসেন বেনু বলেন, ‘গত ২৯ জানুয়ারি জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ এক মতবিনিময় সভায় ভৈরবে আসেন। সেখানে মামুন দলবল নিয়ে থানা চত্বরে উপস্থিত হন। সভায় মামুনের বিষয়টি এসপির নজরে এনে প্রতারিত হওয়ার শঙ্কার কথা বলেছিলাম। যথাসময়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু কেউ সতর্ক হয়নি। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।’

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে, এখন পর্যন্ত কারও কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাইনি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
 

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2