শিক্ষক পেটানো সেই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ২২ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৩৫ এএম, ২১ এপ্রিল,সোমবার,২০২৫

আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নুরুন্নবী নামের এক প্রধান শিক্ষককে তুলে নিয়ে গিয়ে পেটানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন, সহযোগী আসাদুজ্জামান ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতা রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করছেন রৌমারী থানার রুপ কুমার সরকার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। পেটানোর এ দৃশ্য ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। এরপর উপস্থিত লোকজন আহত অবস্থায় ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ওই প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামানসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
নির্যাতিত নুরুন্নবী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অন্যদিকে রোকনুজ্জামান রোকন সদ্য ঘোষিত আংশিক কমিটির উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক।
নির্যাতিত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী অভিযোগ করে বলেন, তার সঙ্গে বিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও আসাদুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যান তিনি। কাজ শেষে অফিসের দোতলা থেকে নেমে উপজেলা চত্বরে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ও তার সঙ্গীয় লোকজন জোরপূর্বক তাকে (প্রধান শিক্ষক) তুলে নিয়ে প্রথম পলি বাস কাউন্টারে আটকে রাখেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
পরে মোটরসাইকেলে করে ওই প্রধান শিক্ষককে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রার বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে নিয়ে যান।
সেখানে ওই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে ঘটনা খুলে বলতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ক্ষিপ্ত হয়ে দু’হাত দিয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের গালে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পর ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ার থেকে উঠে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে থামান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, আওয়ামী লীগ নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ওই প্রধান শিক্ষককে আমার অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন। ওই প্রধান শিক্ষক কথা বলার সময় হঠাৎ তাকে (প্রধান শিক্ষক) চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন রোকনুজ্জামান রোকন। তিনি বলেন, এটা মোটেও ঠিক করেননি রোকন। বড় মাপের অন্যায় করেছেন।
রৌমারী থানার ওসি রুপ কুমার সরকার বলেন, রোকনুজ্জামান রোকন, তার সহযোগী আসাদুজ্জামান ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।