avertisements 2

শ্যামা কাহন-২

অজল জালাল
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৮ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৫ | আপডেট: ১০:০৬ পিএম, ১২ এপ্রিল,শনিবার,২০২৫

Text

গুড়িপাড়া নামটা কেউ শুনেছ কি!

পদ্মার চরে ছাপড়া ঘরে ঠাঁই নেয়া

গুটিকয় ছিন্নমুল মানব সন্তান 

দেশভাগে জিঘাংসার শিকার। 

বিংশের ছেষট্টিতে পদ্মা চরে

মহাকালের পাশ ঘেঁসে ঠাঁই নেয়া

এখন ওরা নগরীর মূল জনপদে

এক আলোকিত আবাস।


স্বাধীনতার স্বাদ অচেনা তাদের

প্রাণীকুলের দু'পেয়ে মানুষ ওরা  

কেউ হেঁটেছে কেউ ভেসেছে কেউবা

ছুটে চলেছে ভাগ্যান্বেশনের তাগিদে।

প্রান্ত বদল করেছে নিজ মাটির

এপাশ থেকে ওপাশ জুড়ে

বাংলা বিহার অসমের সুবে বাঙলায়

ওরা বাঙালীই ছিল আজন্ম। 


সাত চল্লিশের মধ্য আগষ্ট -

ভেঙ্গেচুরে খান হোল বাঙালী হৃদয়

ধর্ম ওদের বাড়া ভাতে ছাই দিল

পরিচয়ে আজ ওরা হিন্দু-মুসলমান।

দিনকাবাড়ি চলনে ছিন্নমুল বটে

জাত পাত ধর্ম কিছুই টানেনা

জেলে বাইদা মাঝি - ওরা মানুষ

বেঁচে থাকার তাগিদ। 


প্রমত্তা পদ্মার পাড় এপার ওপার 

প্রান্তিক মানুষজন আপন বৈভবে

ভাগাভাগির হিন্দু মুসলমান - 

থোড়াই কেয়ার করে। 

ষাট তক চলাচল উন্মুক্ত নিশ্বাসে 

পারাপারে ছিলনা তো বেড়া!

পঁয়ষট্টির যুদ্ধ তাদের ভিনু করে দিল

দুই ভাই অবশেষে নিজ ঠিকানায়।


আসা যাওয়ার হেরাফেরি অশেষ

সন্তর্পনে নিজমতে নীড় খুঁজে নেয়

নৌকাভাসি ছিন্নমূল কর্মজীবি মানুষ

শান্তির শ্বাস ফেলে পদ্মাচরে এসে।

ফারাক্কার ওপারে ভূমিহীন মানুষ

ধর্মের জিঘাংসায় দেশত্যাগী হয়

পদ্মাচরে মহাকালের কোল ঘেঁষে

ছাপড়ার বস্তি তুলে - গড়ে জনপদ।


বস্তিঘরের গোটা বিশ আদম পরিবার

শুরু হয় ছিন্নমুল মানুষের জীবন সংগ্রাম

বেঁচে থাকার আকুল বেদন - শ্যামা নামে

শিশুটির কিশোরী হয়ে উঠার উপাখ্যান।

বছর চার শেষে যুদ্ধ লাগে দেশে 

আশ্রয়হীনের বস্তি, নামে গুড়িপাড়া হয়

ভেসে আসা সাবু মধু তপুরা আজ

গুড়িপাড়া রাজশাহীর নাগরিক সবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2