avertisements 2

রাজনীতির কেউটে

অজল জালাল
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ১৯ জুলাই,শনিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৯:৩৩ এএম, ২০ জুলাই,রবিবার,২০২৫

Text

চেহারাটা বেশ!  উত্তম উত্তম ভাব

ষাট পেরিয়েছে হয়তো, জেল্লাটাও

বেশ চকমকে, ফেয়ার এন্ড লাভলীর

সেই নব্বইয়ের আয়ুষ্মান খোরানা।

রাজনীতির মহাশয় বাংলার হালখাতায় 

ইদানীং তিনি এক নায়কোচিত মুখ।

গত ষোল বছরের রক্তচোষা রাজনীতি

পরাশ্রয়ী দেশ শাসন আর পরম্পরার

ব্যক্তি স্বেচ্ছাচারিতায় সৃষ্ট স্বৈরাচারে

তিনি স্বঘোষিত গুমাভিনয়ে ওপারে।

ওপার! হাঁ, সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে

এটা নিয়েও কানাকানি ফিসফাস। 

রাজনীতির দুর্দিনে পার্টির মুখপাত্র

দিনকয়েক পর উধাও এক্কেবারে লাপাত্তা।

যখন স্বৈরাচারের পাপের বোঝা ডাঁসা

হঠাৎ আকাশ থেকে অহি নেমে এল।

উনি ওপারে পাগলপারা উস্কো খুস্কো

বন্ধু দেশের আইনি হেফাজতে। 

রোগশোকে ক্লান্ত - খোঁজ নেই আর,  

দুটি বছর নিঃশব্দে চলে গেল।

গণতন্ত্রের বিমূর্ত চেহেরায় নাকাল দেশ 

জেঁকে বসা স্বৈরাচারের কালা পাহাড়,

পিতা-ঘোষকের শিবিরে বিভক্ত দেশ

উচ্ছিষ্টভোগীরা এটা নিয়েই সন্তুষ্ট তৃপ্ত।

কিন্তু ছাত্র-যুবা দলহীন যারা!

আঠার থেকে চল্লিশে যাদের পা

জীবন গড়ায় খুঁজে ফিরে দাঁড়াবার ঠাঁই।

জানেনা ভোট কি ! গণতন্ত্রও তাই।  

স্বৈরশক্তির ঘাটে পরম্পরার চাঁদের হাট

অসুরীয় বাহুবলে ওরা উইপোকার ঢিপি।

রাজনীতির হেরাফেরি পরম্পরার মেলা।

তিনটি টার্ম পনেরটি বছর ভোটহীন গণতন্ত্র

অসহ্য যন্ত্রনা বাঙালীর প্রতিটি নিশ্বাসে

ক্ষমতাভোগীর অপর পৃষ্ঠায় ক্ষুধার জ্বালা।

ঠুঁটো জগন্নাথ ওরা খেলোয়াড়ি মাঠে

দ্বিচারিতায় ঠাঁসা তাই কর্মফলে জিরো।

অবশেষে উচ্ছ্বল তারুন্যের শাণিত কৃপান

বৈষম্যের প্রতিবাদী কিশোর যুবার দল

রাজনীতি বিহীন এক যাদুর বাক্স যেন

জন আকাঙ্খার প্রতীক এরা মেধাবীর দল।

 

ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব বৈষম্য বিনাশে

একাট্টা সারাদেশ, আর রাজনীতির ওরা!

বড় সন্তর্পনে গদবাঁধা ছকে,  ভাবখানা 

যেন ধরি মাছ না ছুঁই পানি।

স্বৈরাচারের মরনঘাতে রক্তাক্ত জনপদ 

চৌদ্দ'শ প্রাণের বলি, তবুও দুর্বার ওরা

একদফা একদাবি স্বৈরাচার কবে যাবি।

ছত্রিশে জুলাই ক্যালেন্ডারে পাঁচই আগষ্ট

ছত্রাখান স্বৈরাচার মাফিয়া হোল খানখান

গুষ্টি পারিষদ দেশছাড়া স্বস্তিতে জনপদ।

নতুন পথযাত্রায় রাজনীতির দাদাগিরি

ফিরে এলেন তিনি ন'বছর নির্বাসন শেষে

ছত্রপতি হয়ে আজ সামনের সারিতে।

মহা উপমহাদের নেই কোন বেইল 

রাষ্ট্র চিন্তার হেমিলিয়ন তিনি দেশ উদ্ধারে।

বয়োঃজ্যৈষ্ঠ যারা থ হয়ে নির্বাকের মত 

একটাই মুখ রাজনীতির কেউটে - তিনি

নির্বাসিত বড় নেতার প্রিয়ভাজন বটে।

তাইতো কাঙ্খিত ঐক্যমত্যের সংস্কারে

রাজনীতির বড় মুখ তিনি। 

সংস্কারের রব, নতুন দেশ গড়ার কথা

বড় মিয়াদের উচাতন নিজস্ব কায়দায়

গেল গেল রব ভোট চাই ভোট, নইলে

আর থাকে না সম্মান,গণতন্ত্রের মূলকথা 

জনপ্রতিনিধি, কাজের কাজি তো ওরাই 

সংবিধান দিয়েছে ওদের অঢেল এক্তিয়ার। 

তবে কি ছাত্র-জনতার গণবিপ্লব তোড়ে সৃষ্ট

অন্তর্বর্তী শাসন - এরা অবৈধ! বিধিবহির্ভুত।

আইন বিধি সংবিধানের কথা বলছেন যারা

সবাই কি তাই! বিপ্লবী ছাত্র জনতা ছাড়া। 

জানিনা, দেশটার গতিপথ - কোনদিকে

মাঝখানে কতিপয় দু'পেয়ের সংস্থান

দেশের দুর্দিনে হট সিটে, ওরা শ্রদ্ধেয়জন

এডহকেই সন্তুষ্ট ওদের নেই কোন সাধ।

রাজনীতির কেউটেরা! বিশ্বকর্মা নাটেরগুরু

বাঙালীর হাঁড়ির খবর - জানে ওরা সব

গদবাঁধা তেপান্ন বছরে ওরা দেশের নৃপতি 

চেটেপুটে হাড্ডিসার বাঙালী উঠান

ষোল বছরে পাচার এগার লাখ কোটি।

ওরা দেশভক্ত! রাজনীতির কেউটে!

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2