avertisements 2

নৈতিক শিক্ষার বড় প্রয়োজন আজ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০০ এএম, ৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৫৭ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪

Text

মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে বড় পার্থক্য হলো, মানুষ নৈতিকতাসম্পন্ন জীব, অন্য প্রাণী তা নয়। ন্যায় আর সত্যের পথ অনুসরণ করে অন্যের ক্ষতি না করে যতটুকু সম্ভব উপকার করা, অপরের কল্যাণ করা প্রত্যেক নৈতিকতাসম্পন্ন মানুষের কাজ। প্রতিটি ধর্মেই তাই নৈতিকতার কথা বলা হয়েছে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে।

মানবজীবনের উন্নয়নে ও মানবকল্যাণের সব বিষয়ের প্রধান নির্ণায়ক হলো নৈতিকতা। নৈতিকতার অভাবে শিক্ষক সঠিকভাবে শিক্ষাদান করেন না, অফিসের কাজ ঠিকমতো হয় না, মানবসেবা হয় না, অন্যের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হয় না, মানুষকে পদে পদে হয়রানি করা হয়, ঠকানো হয়। মানুষ কোথায় শিখবে এ নৈতিকতা?

সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন দুর্নীতি। এটি নৈতিকতার অবক্ষয়েরই প্রমাণ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে নৈতিকতার অধঃপতন নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কয়েক যুগ আগেও দেশে যেসব অপরাধের কথা চিন্তা করা যেত না, এখন সে ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে দেদারসে। দেখা যায়, অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ যতটুকু এগিয়েছে, সামাজিক মূল্যবোধ, দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ততটা এগোয়নি। বরং সামাজিক মূল্যবোধ ও সুশাসনের চরম অবনতি ঘটেছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে দুর্নীতি।

ফলে সমাজে অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে, যা টেকসই উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। তাই শৈশব থেকেই নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব বাড়ানো প্রয়োজন। পরিবারে মা-বাবার সঠিক নির্দেশনা পেলে একটি শিশু ছোট থেকেই ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। আর মা-বাবা যদি শিশুর বিকাশকালে তার আবেগ, মন, আচরণ সম্পর্কে অপরিপক্ব থাকে, তাহলে সেই পরিবারে শিশুর বিপথগামিতার আশঙ্কা থাকে বেশি। এছাড়া বাবা-মা বা পরিবারের অন্য সদস্যদের অসদাচরণ, মিথ্যাচার, দুর্নীতিপরায়ণতা, ভারসাম্যহীন ব্যবহার শিশু-কিশোরকে বিপথগামী করে তোলে। কাজেই পরিবার থেকে শিশু-কিশোরদের নৈতিক শিক্ষা প্রদান শুরু করতে হবে বাস্তব জীবনে অনুশীলনের মাধ্যমে।

এখনকার কিশোর ও তরুণরা ভালো বই পড়ে না, ভালো সিনেমা দেখে না। বন্ধুত্বের যথার্থতা তারা বোঝে না। পরিবার শিক্ষার বড় অঙ্গন। সেখান থেকে তারা এ শিক্ষা পায় না। বাবা-মায়ের ব্যস্ততা, সন্তানদের প্রতি উদাসীনতা, কিংবা তাদের অনৈতিক উপায়ে অর্জিত অর্থ এসব কিশোরকে অনৈতিক কাজে উৎসাহ জোগায়। দ্বিতীয়ত, নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। ভালো শিক্ষক, ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করতে পারলে শিশুরা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতার শিক্ষাও পাবে। অসততা, মিথ্যাচার, অসদাচরণ বর্জন করার এবং দেশ ও মানুষকে ভালোবাসার শিক্ষা পাবে।

আমরা জানি ভিক্টোরিয়ান যুগের শিক্ষা দর্শনে Spare the rod spoil the child নীতির প্রচলন ছিল। তখন মনে করা হতো, কঠোর অনুশাসনের মধ্যে না রাখলে শিশু-কিশোররা পথভ্রষ্ট হয়, পড়াশোনায় অমনোযোগী হয় এবং ভালো করে পাঠ আত্মস্থ করতে পারে না। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে শিক্ষা সম্পর্কে এ ধরনের চিন্তাভাবনা দূর হয়েছে। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষককে Friend, philosopher and guide হিসাবে বিবেচনা করা হয়। শিক্ষক হবেন শিক্ষার্থীর পরম বন্ধু। শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করার জন্য খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং ছবির মাধ্যমে শিখন-শেখানো কার্যকর করতে হবে।

বিষয়:

আরও পড়ুন

avertisements 2