রাজশাহীতে পুলিশের ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:২৮ পিএম, ৫ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ১২:৩১ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হারুনুর রশীদের প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গত বুধবার ভিডিও’র বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসার পরপরই অভিযুক্তকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে এএসআই হারুনকে প্রত্যাহারের পর তার অপকর্মের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। এএসআই হারুনের চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, আটক বাণিজ্য ও মাদক বাণিজ্যে তার সম্পৃক্ততার অনেক কাহিনী বেরিয়ে আসছে। তবে টাকা গুণে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার ভিডিওটি লকডাউন সময়ের বলে জানা গেছে। লকডাউনে দোকানপাট খুললেই এএসআই হারুনকে ঘুষ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। এএসআই হারুণ অবশ্য এ নিয়ে এখন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগে জানান, লকডাউনের সময়ে বাগমারার সাজুড়িয়া গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী লেদ আজাদকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ আটকের পর এএসআই হারুন মোটা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। রামরামা হাজরাপুকুর গ্রামের সুবদের ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী সনাতন দাসকেও মাদকসহ আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন এবং জব্দ করা গাঁজা এএসআই হারুন আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, তাহেরপুরের পার্শ্ববর্তী পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষার্থী ইমনকে ১০টি ইয়াবা দিয়ে সাজানো মামলায় চালান করেন এএসআই হারুন। ইমনের পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে প্রতিপক্ষ এএসআই হারুনকে টাকা দিয়ে এই কাজ করায়।
অভিযোগ রয়েছে, গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা গ্রামের একজন সরকারি চাকরিজীবীকে এক নারীর ঘরে ঢুকিয়ে ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা আদায় করেন এএসআই হারুন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এএসআই হারুণের কাজই ছিল দোকানে চাঁদাবাজি আর মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, করোনাকালে লকডাউনের সময় তাহেরপুর বাজারের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে ঢুকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এএসআই হারুন। জলন্ত সিগারেট মুখে রেখে দোকানদারের সঙ্গে দরকষাকষির পর দুই হাজার টাকায় রফা হয়। পরে টাকা গুণে দেখে তিনি আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। পুরো টাকা নিয়েই তিনি একপর্যায়ে দোকান ত্যাগ করেন।
জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ঘটনাটা যাই থাকুক, প্রাথমিক তদন্তে আমাদের মনে হয়েছে এএসআই হারুন কাজটা ঠিক করেননি। তাই তাকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ঘটনা তদন্তের জন্য একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। সেই প্রতিবেদনে যদি এএসআই হারুন অভিযুক্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।